ছবিতে আহত শ্রমিক কিশোর পাসোয়ান।
দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: প্রকাশ্যে এল শহরের সরকারি হাসপাতালের অমানবিকতার ছবি। মৃতপ্রায় রোগীকে ফেরানোর অভিযোগ উঠল কলকাতার মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। কাটা হাত নিয়ে গোটা রাত হাসপাতালের দরজায় দরজায় ঘুরলেন সহকর্মীরা। মঙ্গলবার সকালে মরণাপন্ন যুবককে শেষপর্যন্ত শহরের এক নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, আহত যুবকের নাম কিশোর পাসোয়ান (৩২)। তিনি পেশায় হুগলির ভদ্রেশ্বর-শ্যামনগর জুটমিলের শ্রমিক। সোমবার রাতে তাঁতকলে কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ওই যুবক। তিনি ওই মিলের তাঁত ইউনিটে কাজ করছিলেন। অসাবধানতাবশত তাঁর ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। সহকর্মীরা দেখেন মেশিন থেকে তাজা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। পাশেই যন্ত্রণায় ছটফট করছেন কিশোর। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় গৌড়হাটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কোনওরকম পরিষেবার সুযোগ মেলেনি বলে অভিযোগ। এরপর সেই রাতেই কাটা হাত ও রোগীকে নিয়ে সহকর্মীরা ছোটেন কলকাতায়। গন্তব্য মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল। অভিযোগ, সেখান থেকেও বিনা চিকিৎসায় ফেরানো হয় রোগীকে। বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী এ ও বি শিফটে কর্মরত শ্রমিকরা কোনও কারণে আহত হলে এখান থেকে চিকিৎসা পরিষেবা মিলবে। কিন্তু কিশোরবাবু রাতের শিফটে কাজ করছিলেন। তাই তাঁর পরিষেবা দায়িত্ব নেবেনা মানিকতলা ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই কথায় বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন ওই যুবকের সহকর্মীরা। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার সকালে কিশোর পাসোয়ানকে এক নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই শ্রমিক। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা রাতে কোনও রকম চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ায় ক্ষতস্থান বিষিয়ে গিয়েছে। ওই যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের ডান হাত বাদ গেলেও হেলদোল নেই মিল মালিকের। সোমবার রাত থেকে এখনও পর্যন্ত ওই যুবকের কোনও খোঁজখবর নেয়নি মালিক পক্ষ। এমনটাই অভিযোগ। ক্ষুব্দ সহকর্মীরা কাজ বন্ধ করে মিলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.