সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: রাজ্যের উদ্যোগে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে কার্শিয়াংয়ের রাজ রাজেশ্বরী হল৷ কাজ চলছে জোরকদমে৷ গত বছর পাহাড়ে অশান্তির জেরে বিমলপন্থী মোর্চা সর্মথকরা শতবর্ষের এই হেরিটেজ ভবনটিকে আগুন লাগিয়ে ভস্মীভূত করে দেয়৷ দীর্ঘ একবছর ভগ্নদশায় থাকার পর ভবনটি নতুন করে তৈরির কাজে হাত লাগাল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর৷ কয়েক কোটি টাকা খরচে ভবনটির আদ্যোপান্ত বদলে ফেলা হচ্ছে পুরো নকশা৷ তবে মূল আদলের কোনও পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে না। কাজ প্রায় আশি শতাংশ শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন দপ্তরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ৷
তিনি আশাবাদী পুজোর পরপরই, পর্যটন মরশুমের শুরুতে খুলে দেওয়া যাবে এই ভবনটি। মন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল৷ তা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে৷ মূল আদলকে অপরিবর্তিত রেখে কিছু পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে ভবনটিতে। আরও বেশি আকর্ষণীয় করতে ভবনটিকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।” পাশাপাশি ভবন থেকে কিছুটা দূরে যেখানে মূল রাস্তা, তার উপর একটি সাইনবোর্ড লাগিয়ে ভবনটির দিক নির্দেশ করা হচ্ছে বলে দপ্তর সূত্রে খবর৷ যাতে শহরের প্রধান রাস্তা থেকেই দেখতে পাওয়া যায়৷
[মধ্যরাতে ছাত্রের বাড়িতে কড়া নাড়েন, ‘খেপা মাস্টার’-কে চেনেন?]
গত বছর ১৭ জুন বিমল গুরুং ও রোশন গিরির নেতৃত্বে মোর্চা কর্মী-সমর্থকরা জঙ্গি আন্দোলনের মাধ্যমে পুড়িয়ে দেয় ১০০ বছরের পুরনো কার্শিয়াংয়ের বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের এই হেরিটেজ হলটি৷ যা নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছিলেন ওই হলটির ট্রাস্টি সদস্যরা৷ এর আগেও ১৯৮৬ সাল থেকে বেশ কয়েক বছর পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল পাহাড়ে৷ আবার ২০০৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত আরও একবার আন্দোলন হয়। কিন্তু পাহাড়ের হেরিটেজ ও ঐতিহাসিক সম্পত্তিগুলি কখনও আক্রমণের লক্ষ্য ছিল না। কিন্তু বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে বাইরে থেকে আনা একদল উগ্র-আন্দোলনের কর্মী সমর্থকরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন৷ জঙ্গি আন্দোলনের জেরে আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায় হলটি৷ এই হলটি শহরের একমাত্র দুর্গাপুজোর পীঠস্থান এবং একবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও এখানে এসেছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের৷ ২০১৬ সালে এখানকার দুর্গাপুজো একশোতে পা দিয়েছে। সেই হিসেবে এবার তা ১০২ বছরে পড়বে। এবার কাজ সম্পূর্ণ না হলেও পুজো ভালভাবেই করা হবে বলে জানানো হয়েছে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.