সুমিত বিশ্বাস ও অমিতলাল সিং দেও: রাইকা পাহাড়তলি যেন সুন্দরবন! বাঘিনীর হামলা ঠেকাতে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়তলির রাহামদা গ্রামের শবর টোলা একেবারে
সুন্দরবনের ধাঁচে জাল দিয়ে পাহাড় ঘিরেছে। সুন্দরবনে যেভাবে নদীর চরে জাল বিছিয়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের কাছ থেকে সুরক্ষিত রাখে গ্রামের পর গ্রামকে। ঠিক সেইভাবেই মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের আধিকারিক-কর্মীরা ওই রাহামদা গ্রামের শবর টোলাকে জাল দিয়ে ফেনসিং করে।
পুরুলিয়ার পাশাপাশি এই জাল নিয়ে আসা হয় ঝাড়গ্রাম থেকেও। এছাড়া সুন্দরবন থেকে আসে দুটি খাঁচাও। ফলে এদিন জিনাতকে পাঁচটি খাঁচায় টোপ দেওয়া হবে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু জিনাত সেই টোপ গিললে তো? সিমলিপালের ওই বাঘিনী যে নিজেই শিকার করে আহার সারছে। আর তাতেই আতঙ্ক বাড়ছে। তাই বাঘিনী থেকে বাঁচতে রাইকা পাহাড়তলি লাঠি নিয়ে রাত জাগছে।
মঙ্গলবার ভোর রাত থেকে ওড়িশার বাঘিনী জিনাত যেভাবে একের পর এক ছাগল কিলিং শুরু করে। তাতে আতঙ্কিত রাইকা পাহাড় সংলগ্ন রাহামদা, কেসরা, উদলবনি, লেদাশাল
গ্রামগুলির মানুষজন। তাই ওই বাঘিনী যাতে গ্রামে ঢুকে গবাদি পশুর ওপর হামলা চালাতে না পারে, কোন ক্ষতি না করে সেই কারণেই জাল বিছানো বনদপ্তরের। যে কাজ রূপায়িত করেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিশেষজ্ঞরা। গত চার দিন ধরে জিনাত রয়েছে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়-জঙ্গলে। বর্তমানে ওই বাঘিনী রাইকা পাহাড়ের ঝাঁড়া-ভাঁড়ারি টিলায় রয়েছে।
ওড়িশার সিমলিপাল ব্যাঘ্র প্রকল্প থেকে জিনাত ঘরছাড়া হয়ে ঝাড়খণ্ডে। তারপর বাংলার ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির কাটুচুয়া-কাঁকড়াঝোড় থেকে ময়ূরঝরনায় ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের বান্দোয়ান এক বনাঞ্চলের ঘাঘরা গ্রাম হয়ে সোজা রাইকা পাহাড়। দুদিন জিনাত চুপচাপ থাকার পর মঙ্গলবার ভোররাত থেকে কিলিং শুরু করে ওই বাঘিনী। ফলে ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন ওই রাইকা পাহাড়তলির মানুষজন। রাহামদা গ্রামের শবর টোলার বাবুরাম শবর, লক্ষণ শবর বলেন, “আমরা ভয়ে রয়েছি। জানি না গ্রামে বাঘিনী ঢুকে গেলে কি হবে? এই জাল কি ওই বণ্য প্রাণীকে আটকাতে পারবে?” এমন বহু প্রশ্নে আশঙ্কায় রাইকা পাহাড়তলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.