সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিলম্বিত বোধোদয়? বয়স্কদের পাশে রেখে সিপিএম বঙ্গ ব্রিগেডে একঝাঁক তরুণ মুখ আসার সম্ভাবনা বাড়তেই এই প্রশ্ন উঠছে সব মহলে৷ উত্তর পেতে মুখিয়ে সাধারণ সমর্থক থেকে দলের একনিষ্ঠ কর্মী সকলেই৷ সূত্রের খবর, দলের সদ্য সমাপ্ত রাজ্যকমিটির বৈঠকে লোকসভা ভোটে শোচনীয় ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি৷ তিনি বলেছেন, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হারের দায় আমার৷’
রক্তক্ষরণ অব্যাহত ছিলই৷ উনিশের ভোটে কার্যত রক্তশূন্য হয়ে গিয়েছে বামপন্থী সংগঠনগুলি৷ গোটা দেশেই অত্যন্ত খারাপ ফল বামফ্রন্টের৷ আর এরাজ্যে ৩৪ বছর বীরবিক্রমে শাসনের পর মাত্র ৮ বছরের মধ্যেই তাঁদের শক্তি একেবারে শূন্য৷ লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে একটিও আসনে জেতা দূর, কোথাও দ্বিতীয় স্থানেও নেই সিপিএম৷ যাদবপুরের দলীয় প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বাদে সর্বত্র প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে৷ ভোটের হার হু হু করে নেমে গিয়েছে৷ অন্তর্তদন্তে উঠে এসেছে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের কথা৷ এই পরিস্থিতিতে পর্যালোচনা বৈঠকও যেন অপ্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
তা সত্ত্বেও দলীয় লাইন, আদর্শ মেনে ফি বারের মতো এবারও আলিমুদ্দিনে বসেছিল দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক৷ সূত্রের খবর, সেখানে নেতারা মেনে নিয়েছেন, মাঠে নেমে আন্দোলন অপেক্ষা তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রচার ময়দানে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ায় আদৌ মানুষের মনে কোনও ছাপই ফেলতে পারেনি একদা ক্ষমতায় থাকা দলটি৷ অভিজ্ঞতা দিয়েও জনসংযোগে ডাহা ফেল বর্তমান নেতৃত্ব৷ আর এখানেই অমোঘভাবে উঠে এসেছে নেতৃত্ব বদলের প্রসঙ্গ৷ সূত্রের খবর, প্রবীণদের বদলে বঙ্গ সিপিএমে তরুণ মুখ চাই, এই প্রয়োজনীয়তা এবার এককথায় মেনে নিয়েছেন বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা৷
তাহলে কি সত্যিই আমূল সংস্কারের পথে হাঁটছে বঙ্গ ব্রিগেড? দীর্ঘদিনের পদ ছেড়ে সরে দাঁড়াবেন বিমান বসুরা? পক্ককেশ কমরেডরা বিশ্রামে গিয়ে যুব প্রজন্মের কাঁধে তুলে দেবেন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার গুরু দায়িত্ব? সেই দিন কি সামনেই? এমনই নানা প্রশ্নের ভিড় বাড়ছে মুজফ্ফর আহমেদ ভবন ঘিরে৷ তবে বিশেষজ্ঞরা এবিষয়ে একমত৷ তাঁরা বলছেন, এখনও সময় আছে৷ এখনও সংস্কারের পথে হাঁটলে আগামীতে সফলভাবে শ্রেণি সংগ্রাম সংগঠিত করতে পারবেন বামপন্থীরা, যা কিনা একান্ত তাঁদেরই রাজনৈতিক আদর্শ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.