চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: পঞ্জিকা মতে ৪ঠা বৈশাখ। বিয়ের শুভদিন, শুভ লগ্ন। সেই মতো শুক্রবার বসল বিবাহ বাসর। হল শুভদৃষ্টি। মালা বদলও হল। কিন্তু দু’য়ে দু’য়ে চার হাত এক হয়ে হল না ‘হস্তবন্ধন’। হল না ‘কনকাঞ্জলি’। বিয়ের আসরে মহিলারা জমায়েত করে দিতেও পারলেন না উলুধ্বনি। এল না ব্যান্ডপার্টি। অথচ মাস ছয়েক আগেই জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন ছিল। কিন্তু সব তৈরি থাকলেও সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা গেল না। করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউনের আবহে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই বিয়ে সারতে হল পাত্র-পাত্রীকে।
মুখে মাস্ক, বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী ও পুরোহিতের হাতে দেওয়া হল স্যানিটাইজার। কালী মন্দিরে বিয়ের পর যৌতুক ও আর্শীবাদ হিসেবে তুলে দেওয়া হল ত্রাণের চাল, ডাল, আলু, তেল, আটা, সাবান। অভিনব বিয়ের সাক্ষী থাকল সালানপুরের উত্তরামপুর জিতপুরের কল্যানগ্রামের ডাঙালপাড়া।
কল্যাণগ্রাম-৬ ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা ছোটন মির্ধার ছেলে জগন্নাথ মির্ধার সঙ্গে বিয়ে হল ওই গ্রামের বাসিন্দা টুলু দাসের মেয়ে মিনু দাসের। উত্তরামপুর জিৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তাপস চৌধুরীর সহযোগিতায় কল্যাণগ্রাম-৫ এলাকার কালী মন্দিরে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হল শুক্রবার। দুই পরিবারের সম্মতিতে ৬ মাস আগেই পঞ্জিকা মতে এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছিল বিয়ের জন্য। কিন্তু বাদ সাধলো করোনা সংক্রমণ ও লকডাউন। বিয়ে পণ্ড হয়ে যেতে বসেছিল। দিনমজুর টুলু দাসের মন মানছিল না। বিয়ের দিনক্ষণ আয়োজনের পর মেয়ের বিয়ে না হলে, তাতে অমঙ্গল হবে। সেই বিশ্বাসেই শেষ পর্যন্ত পাত্রীর বাবার জোরাজুরিতে প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে, লকডাউনের নিয়ম ও শর্ত মেনে বিয়ে হল এদিন।
পঞ্চায়েত প্রধান তাপস চৌধুরী বলেন, “সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দুই পরিবার মিলে মোট ১০ জনের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। ওঁরা একই গ্রামের পাত্রপাত্রী হওয়ায় এই বিয়ে দেওয়া সম্ভব হল। ভিন গাঁ বা ভিন জেলা হলে এই বিয়ের আয়োজন সম্ভব হতো না।”
দেখুন ভিডিও
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.