রাজা দাস, বালুরঘাট: খবর পাওয়া মাত্রই তপনের আশ্রয়হীন পরিবারকে সাহায্যের তৎপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। জমি নিয়ে দুইপক্ষের বিবাদকে কেন্দ্র করে, আগুনে বাড়িঘর ভস্মীভূত হয়ে নিরুপায় কয়েকটি পরিবার রাস্তায় দাঁড়িয়েছে এমনটা জানতে পেরেই উদ্বিগ্ন হন তিনি। মানুষের সমস্যাতে তিনি যে বরাবরের মতো পাশে রয়েছেন তা ফের প্রমাণ হল মঙ্গলবার।
মঙ্গলবার বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বুনিয়াদপুরের নারায়ণপুর ময়দান থেকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য সব ধরনের সহায়তার কথা বলেন। এদিন এই কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রথম ইটাহার ও পরে বুনিয়াদপুরে আসেন তিনি। এখানে তার সঙ্গে ছিলেন, বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ, জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দোপাধ্যায়, বাচ্চু হাঁসদা, তৃণমূল নেতা শংকর চক্রবর্তী-সহ অন্যান্যরা। এদিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা। তাকে না জানিয়ে সভাস্থল পরিবর্তন করা নিয়েই ক্ষোভপ্রকাশ করেন প্রশাসন ও দলীয় নেতাদের উপর। শুরুতেই তিনি রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান এক এক করে তুলে ধরেন। এরপরেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন এলাকার অসহায় পরিবারের পাশে তিনি বা তাঁর সরকার সদাসর্বদা রয়েছেন তা স্পষ্ট করেন মঞ্চ থেকে।
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী বলেন, এদিন সকালে তিনি খবরের কাগজ দেখছিলেন। সেখানেই তার নজরে আসে রবিবার রাতে তপনের গুলডাঙার ঘটনাটি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি এখানকার জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র, স্থানীয় বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা এবং প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের কাছে খোঁজখবর নেন। তিনি জানতে পারেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদে বেশ কিছু বাড়িঘর পুড়ে গিয়ে আশ্রয় বা ছাদহীন বেশ কিছু মানুষ। তাঁরা যাতে প্রয়োজনীয় সাহায্য পায় তার জন্য প্রশাসন ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানান তিনি৷ নেত্রী বলেন, ‘আমি চাই না কেউ অসহায় থাকুক। কারও বাড়ি পুড়ে গেলে, কারও ঘর ভেসে গেলে কিংবা কারও জমি চলে গেলে আমরা সাহায্য করি। এটা আমাদের কাজ। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যারা দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের প্রশাসন গ্রেপ্তার করেছে। আমরা মানুষের হয়ে কাজ করি। আমার সঙ্গে যারা রয়েছে তারাও মানুষের জন্যই কাজ করেন।’
প্রসঙ্গত, দুই পক্ষের বিবাদে রবিবার রাতে রণক্ষেত্র তৈরি হয় তপন থানার রামপাড়া চেঁচড়ার গুলডাঙা গ্রামে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয় একজনের। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ৮টি বাড়ি, ৫টি মোটরবাইক-সহ বেশ কিছু গবাদি পশু পুড়ে মারা যায়। মৃত ব্যক্তির নাম রফিক মিঁয়া (৫৫)। মৃত রফিক ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল ওই গ্রামেরই বারিক মিঁয়া ও আলতাব আলির। অভিযোগ, রবিবার রাতে রফিকের আত্মীয় মফিজুদ্দিন মিঁয়ার সঙ্গে বিবাদ হয় বারিক ও আলতাবের। সেই বিবাদ ধীরে ধীরে চরম আকার নেয়। আশপাশ থেকে প্রচুর লোক নিয়ে এসে বারিক ও আলতাব ওই পরিবারের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় আশ্রয়হীন বেশ কিছু মানুষ। তারা শিশুসন্তান নিয়ে অসহায় ভাবে রয়েছে এমনটা নজর এড়াইনি তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রীর।
ছবি: রতন দে
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.