সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরভোটে অঘটন। অল্প ভোটের ব্যবধানে হার। তার জেরে আত্মঘাতী হলেন নদিয়া কুপার্স ক্যাম্প পুরসভার এক নির্দল প্রার্থী। মৃতের নাম সুপ্রিয়া দে। তাঁর পরিবারের বক্তব্য, একাধিক ওষুধ খেয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেন সুপ্রিয়া। গত দুবারের কাউন্সিলর সুপ্রিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তাঁর স্বামীর হাত দেখছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরভোটের দিন বুথের মধ্যে এক তৃণমূল কর্মীকে থাপ্পড় মেরে শিরোনামে এসেছিলেন সুপ্রিয়া।
শঙ্কর সিং ম্যাজিকে প্রথমবার কুপার্স ক্যাম্প জয় তৃণমূলের। ১২টি ওয়ার্ডেই ঘাসফুলের জয়জয়কার। রানাঘাট লাগোয়া এই পুর এলাকায় শাসক দলের এই বিপুল জয়ের মধ্যে এল দুঃসংবাদ। ১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী সুপ্রিয়া দের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। এদিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ গণনা শেষ হয়। মাত্র ৩০ ভোটে তৃণমূল প্রার্থী অশোক সরকারের কাছে হেরে যান নির্দল প্রার্থী সুপ্রিয়া। পরিবার সূত্রে খবর, গণনাকেন্দ্র থেকে বাড়িতে ফিরে এসে তিনি বেশ কিছু ওষুধ খেয়ে ফেলেন। বেলার দিকে সুপ্রিয়া অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সুপ্রিয়াকে রেফার করা হয় কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃতের স্বামী সমীর দের বক্তব্য, ‘প্রচুর উন্নয়নের পরও টিকিট না পাওয়ায় বিধ্বস্ত ছিলেন স্ত্রী। এদিন হারের পর গণনাকেন্দ্রে তৃণমূল কর্মী সুপ্রিয়ার উদ্দেশ্যে টিপ্পনি কাটে। এতে আরও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বাড়িতে ফিরে তিনি চরম সিদ্ধান্ত নেন।’
ওই ওয়ার্ডে কংগ্রেসের টিকিটে গত দুবার কাউন্সিলর হয়েছিলেন সুপ্রিয়া। এবার তৃণমূল তাঁকে টিকিট দেয়নি। তাই নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে যান। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে ইভিএম ঘোরানো নিয়ে এক তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে তাঁর গণ্ডগোল বেধেছিল। ওই তৃণমূল কর্মীকে প্রকাশ্যে চড় মেরেছিলেন সুপ্রিয়া। যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল। সুপ্রিয়ার মৃত্যুতে মুখ খুলেছেন জয়ী তৃণমূল প্রার্থী অশোক সরকার। জয়ী প্রার্থীর বক্তব্য, ‘সুপ্রিয়ার স্বামী সমীর দের নামে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। আমাদের ধারণা নিজের কুকীর্তি ঢাকতে স্ক্রীকে মেরে ফেলতে পারেন সমীর। তৃণমূল কর্মীরা সুপ্রিয়ার সঙ্গে কোনওরকম দুর্ব্যবহার করেনি।’ মৃতের পরিবার অবশ্য বলছে সুপ্রিয়ার মৃত্যু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তবে ভোটের লড়াইয়ের মতো জীবনের যুদ্ধেও হেরে গেলেন সুপ্রিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.