Advertisement
Advertisement

‘ভাইরাল’ হল অনুব্রতর ‘চড়াম চড়াম’, ঢাকের বোলে অন্য ‘দেবী’ পক্ষ

‘সিম্ফনি’-র কর্ণধার প্রেম গুপ্তা জানিয়েছেন, সাধারণত, পুজোর সময়ই শুধু ঢাকের সিডি বিক্রি হয়৷ কিন্তু এবার সেই অঙ্ককেও ছাপিয়ে গিয়েছে৷

Bengal Celebrates TMC's Victory With Dhak
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 20, 2016 9:31 am
  • Updated:May 20, 2016 9:31 am  

গৌতম ব্রহ্ম: পুজো নেই, পার্বণ নেই৷ তবু ঢাকের তালে দুলে উঠল বাংলা৷
পাহাড় থেকে সাগর, সর্বত্র বোল উঠল ‘চড়াম চড়াম’৷
ঢাক বলতে এতদিন বাংলা বুঝত ‘ঢ্যাম কুড়াকুড় বা ‘ড্যাং ড্যা ড্যা ড্যাং’৷ এবার ‘চড়াম চড়াম’৷
ঢাকের বোলেই তো দেবীপক্ষ শুরু৷ দুর্গার বোধন৷
এবারও যেন তারই প্রতিচ্ছবি৷ যেভাবে বাম-কংগ্রেস জোটকে চুরমার করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে দ্বিতীয় ইনিংসের কাউন্টডাউন শুরু করলেন তাকে দেবীপক্ষর শুরু ছাড়া আর কী বলা যায়! তাই ঢাকের বোলের সঙ্গে মানানসই হয়ে গেল এই জয়৷
পুজোর সময় শিয়ালদহ-হাওড়া স্টেশন, চিৎপুরে ঢাকিরা দল বেঁধে চলে আসতেন৷ বাজনা শুনে পুজো কমিটি বায়না করত ঢাকের৷ অন্য সময় ঢাকিদের দেখা মিলত না৷ এবার কিন্তু ফলপ্রকাশের আগের দিনই কয়েকশো ঢাকি হাজির হয়ে গিয়েছিলেন এই তিন জায়গায়৷ সৌজন্যে বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ নির্বাচনী প্রচারে নেমে অনুব্রতই প্রথম ‘চড়াম চড়াম’ ঢাক বাজানোর নিদান হেঁকেছিলেন৷ বলেছিলেন, আগের বার ভোটের ফল প্রকাশের পর রাজ্যজুড়ে রবীন্দ্রসংগীত বেজেছিল৷ এবার ‘চড়াম চড়াম’ ঢাক বাজবে৷’
সেই ‘চড়াম চড়াম’-ই এখন মা-মাটি-মানুষের রিংটোন হয়ে বাজছে৷ ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে মোবাইল ল্যাপটপ-ডেস্কটপে৷ ঢাকিদের মুখেও চওড়া হাসি৷ মওকা বুঝে তাঁরাও ভাল দর হেঁকেছেন৷ কোথাও হাজার টাকা, কোথাও দেড় হাজার টাকা৷ কোথাও আবার আরও বেশি৷ প্রত্যেকেই হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন অনুব্রতকে৷ বলেছেন, “ওই মানুষটাই তো আমাদের বাজারদর বাড়িয়ে দিয়েছে৷”
সত্যি, গণতন্ত্রের উৎসবে এভাবে কখনও ঢাক বাজেনি৷ বোল ওঠেনি ‘চড়াম চড়াম’৷ অনুব্রত নিজেও ভাবেননি, তাঁর ভাষা প্রক্ষেপণ এভাবে বদলে দেবে ঢাক-শিল্পীদের কপাল৷ সবুজ আবির, মিষ্টিমুখ, তাসা পার্টি৷ কিন্তু সব ছাপিয়ে গিয়েছে ‘চড়াম চড়াম’৷
দুধের সাধ অবশ্য ঘোলে মিটিয়েছেন অনেকে৷ ঢাকের বদলে ঢাকের সিডি কিনে চালিয়েছেন৷ ধর্মতলার ‘সিম্ফনি’, রাসবিহারী মোড়ের ‘মেলোডি’-তে ঢাকের-সিডির বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে৷ ‘সিম্ফনি’-র কর্ণধার প্রেম গুপ্তা জানিয়েছেন, সাধারণত, পুজোর সময়ই শুধু ঢাকের সিডি বিক্রি হয়৷ কিন্তু এবার সেই অঙ্ককেও ছাপিয়ে গিয়েছে৷
যাদবপুরের এক তৃণমূল নেতা আবার পেশাদার অ্যারেঞ্জারকে দিয়ে আগাম ‘চড়াম চড়াম’ থিম সংগীত বানিয়ে রেখেছিলেন৷ যদিও যাদবপুরের তৃণমূল প্রার্থী মণীশ গুপ্ত হেরে যাওয়ায় সেই গান চলেনি৷ তবে, ‘ভাইরাল’ হয়ে ঘুরপাক খেয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকে৷ ‘আহা কী আনন্দ মা-মাটি-মানুষে, ধান্দাবাজির জোট কুপোকাত, চড়াম চড়াম বাজাব ঢাক৷’
সোশ্যাল মিডিয়াতেও দাপট দেখিয়েছে ‘চড়াম চড়াম’৷ বেলা গড়াতে না গড়াতেই ফেসবুক-টুইটারে ভেসে ওঠে সূর্য-বিমান-অধীরদের হরেক ‘সুপার-ইম্পোজ’ করা ছবি৷ জোট-ফানুস চুপসে যাওয়া নিয়ে নানা রসিকতা৷ কিন্তু ম্যান-অব দ্য ম্যাচ অবশ্যই ‘চড়াম চড়াম’৷

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement