ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফণীর পর এবার রাজ্যকে গ্রাস করছে ‘বুলবুল’ আতঙ্ক। ভয়ংকর এই ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই উপকূল এলাকায় জারি হয়েছে সতর্কতা। বুলবুলের মোকাবিলায় একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা-সহ একাধিক জেলা। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় আগামিকাল শনিবার দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, সুন্দরবন, পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম ও কলকাতা-সহ বেশ কয়েকটি জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস আগেই জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যে সুন্দরবনের উপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপকূলে আছড়ে পড়লে ঘূর্ণিঝড়ের গতি অনেকটাই কমবে। তবে বারবার পথ ও বেগ বদলাচ্ছে বুলবুল। গতকাল রাত থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়, এর অভিমুখ সুন্দরবনই। আজ সকাল থেকেই কলকাতার আকাশও মেঘে ঢাকা ছিল। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিও হয়েছে। আগামিকাল রাতে সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের মধ্যে খেপুপাড়ার মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করবে বুলবুল। সেই সময় এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩৫ কিমি। সেই কারণেই জারি হয়েছে আগাম সতর্কতা। ছুটি ঘোষিত হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে।
এটা নিশ্চিত, বুলবুলের জোরাল প্রভাব পড়তে চলেছে ৯ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সুন্দরবন পুলিশ ও মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে এদিন মাইকিং করা হয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিন পুলিশ ও মৎস্য দপ্তর নদী ও সমুদ্রে কড়া নজরদারি চালাবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আগামী কয়েকটি দিন নদী এলাকায় প্রস্তুত থাকবে দল। কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার মহকুমা প্রশাসনও প্রস্তুত। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সদর আলিপুরে শুক্রবার জেলাশাসক পি উলগানাথনের নেতৃত্বে দুটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ঝড় মোকাবিলার নীল নকশা তৈরি হচ্ছে। উপকূলবর্তী সমস্ত বিডিও অফিস ও গ্রাম পঞ্চায়েতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার কথা জানিয়েছেন কলকাতার মেয়র মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও। ৪৮ ঘণ্টা খোলা থাকবে শহরের কন্ট্রোল রুমও। কলকাতা পুলিশের তরফেও বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। শহরের জনবহুল এলাকায় গাছ পড়ে গেলে কীভাবে দ্রুত তা সরানো সম্ভব, ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কী কী পদক্ষেপ জরুরি, ঝড়ের মধ্যে বিপদসঙ্কুল বাড়িতে কেউ আটকে পড়লে তাঁকে কীভাবে উদ্ধার করতে হবে, সেসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি শহরবাসীকে সতর্ক করতে মাইকিংও করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.