সুব্রত বিশ্বাস: লকডাউন ভেঙে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাড়ির বাইরে বেরনোর ঘোর বিরোধী তিনি। বরং দেশের এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় নামতে চান ওসমান শেখ। পাশে দাঁড়াতে চান স্বাস্থ্যকর্মীদের। পলি প্রাইমার দিয়ে পিপিই (Personal protective equipment) তৈরি করে স্বাস্থ্যকর্মী থেকে করোনার যুদ্ধে নামা বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান ওসমান।
হাসপাতালগুলিতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের উপযুক্ত সুরক্ষা কবচ নেই। একথা জানতে পেরে তিনি নিজেই তৈরি করে ফেলেছেন এই পোশাক। পলি প্রাইমার দিয়ে তৈরি এই পোশাকে একেবারে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢাকা থাকবে। তবে মুখে মাস্ক ও চোখে চশমা পরতে হবে আলাদা করে। ওসমানের দাবি, কোনও রকম তরল, ধুলো এমনকী ভাইরাসও পোশাক ভেদ করে ভিতরে যেতে পারবে না। সেলাইয়ের বদলে ঢালাই করে জুড়েই এই পোশাক তৈরি হচ্ছে।
চিকিৎসকদের মতে, ইমপারভিয়াস মেটেরিয়াল দিয়ে পিপিই তৈরি হয়। যা ভেদ করে কোনও তরল বা জীবাণু ভিতরে যেতে পারে না। এই কথার উপর ভিত্তি করেই কাজ শুরু করেন বেলুড় মঠের পাশে হেম পাল লেনের বাসিন্দা ওসমান। রেনকোট তৈরি করাই মূলত তাঁর পেশা। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিস্থিতি জানার পর মত বদলে ফেলেন তিনি। স্থির করেন রেনকোট নয়, এই সময় পিপিই তৈরি করবেন তিনি। করোনা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে তিনি তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান। শুরু হয় তোড়জোড়। স্বচ্ছ হালকা পলি প্রাইমার দিয়ে তৈরি হয় পিপিই। এর জন্য খরচ পড়ছে মাত্র ৫০০ টাকা। এক একটা পোশাক তৈরিতে সময় লাগছে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। তাঁর তৈরি পোশাক পরীক্ষা করে স্বাস্থ্যসম্মত কি না, তা দেখার আবেদন জানিয়েছেন ওসমান। পাশাপাশি প্রয়োজন পড়লে হাসপাতালগুলিতে এই পোশাকের জোগান দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। চিকিৎসাবিধি মেনে উপযুক্ত হলে তিনি দৈনিক দেড়শোটি এ ধরনের পোশাক যোগান দিতে পারবেন বলে জনিয়েছেন ওসমান।
তাঁর দাবি, স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া, পুরসভার সাফাইকর্মী থেকে করোনার লড়াইতে নাম প্রতিটি মানুষ ব্যবহার করতে পারবেন এই পোশাক। এগুলি ইম্পারভিয়াস মেটেরিয়ালের চেয়ে শক্ত ও টেকসই। ফলে সহজে ছিঁড়ে যাবে না। সাশ্রয় হবে টাকা। ওসমান শেখের কথায়, দুর্দিনে পাশে থাকাটাই প্রকৃত ধর্ম। তাই করোনা যুদ্ধে স্বাস্থ্যকর্মীরা যখন সামনে থেকে লড়ছেন, তাঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.