সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পতাকা উত্তোলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কৃতী ছাত্রছাত্রী সংবর্ধনা, দুঃস্থদের ফল-বস্ত্র বিতরণ-সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে দিনটিতে ছিল উৎসবের মেজাজ। বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তর জন্মভিটেয় খণ্ডঘোষের ওঁয়াড়ি গ্রামেও সাড়ম্বরে পালিত হয় দিনটি। বটুকেশ্বরের জন্মভিটেকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র। পাশাপাশি, বটুকেশ্বর দত্ত ও ভগৎ সিং গ্রামের একটি বাড়ির সুরঙ্গে আত্মগোপন করেছিলেন সেটিও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে।
বুধবার সকালে বর্ধমানে জেলাশাসকের দপ্তরে সামনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। সেখানে পতাকা উত্তোলন করেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। জেলা পুলিশে ব্যান্ড, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করেন গাংপুরের নজরুল স্মৃতি দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ের শিল্পীরা এবং আয়না কালচারাল সেন্টারের শিল্পীরা। তার পর মেহবুব হাসানের পরিচালনায় বর্ধমান ছন্দমের শিল্পীরা দেশাত্মবোধক নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করেন। কচিকাঁচাদের চকোলেট উপহার দেন জেলাশাসক। কালনা ও কাটোয়া মহকুমাতেও সাড়ম্বরে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়। কাটোয়ায় মহকুমা শাসকের দপ্তরে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল এই উপলক্ষে।
কালনা মহকুমারর অনুষ্ঠানটি পালিত হয় পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর ভবতারিণী রায় বালিকা বিদ্যালয়ে। সেখানে পতাকা উত্তোলন করে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে। মেমারির সাতগাছিয়া বাজারে এক সভাকক্ষে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের এলাকার ১৮০ জন কৃতী পড়ুয়াকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় বলে জানান জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল। এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষকদেরও সম্মানিত করা হয় সেখানে। বর্ধমান-১ ব্লকেও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। বর্ধমান শহরে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার তরফেও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিবিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়।
শহিদ ভগৎ সিংহের সহযোগী বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্ত। তাঁর জন্মস্থান পূর্ব বর্ধমানের ওঁয়াড়ি গ্রামে। সংসদে বোমা হামলার পর ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর চলে এসেছিলেন এই গ্রামে। সেখানে নগেন্দ্রনাথ দত্তর বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলেন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত। সেখানে ১৫ দিন তাঁরা আত্মগোপন করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পরে মহিলার বেশে মহিলার ছদ্মবেশে পালান। গ্রামবাসী প্রণয় ঘোষরা জানান, সেই সুরঙ্গ এখনও রয়েছে। পরে অবশ্য এই দুই বিপ্লবী গ্রেপ্তার হন ব্রিটিশ পুলিশের হাতে। রাজ্য সরকারে পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে ওঁয়াড়ি গ্রামে বটুকেশ্বর দত্তর জন্মভিটেকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজও চলছে। হয়েছে মিউজিয়াম। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরঙ্গ সংরক্ষণের জন্য সাড়ে ৪২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই কাজও চলছে।
[ফের অশান্ত উপত্যকা, জঙ্গি ও সেনার মধ্যে চলছে গুলি বিনিময়]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.