Advertisement
Advertisement
Basirhat Lok Sabha Election Result

‘রেখা’-পাত নেই বসিরহাটে, সন্দেশখালি খালি হাতেই ফেরাল বিজেপিকে

সন্দেশখালি বুঝিয়ে দিল, মোদি নন, দিদিই তাঁদের ভরসাস্থল।

Basirhat Lok Sabha Election Result: Sandeshkhali factor failed to garner ballots for BJP
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:June 4, 2024 7:17 pm
  • Updated:June 4, 2024 11:23 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যাশা ছিল রেখা-পাতের। প্রত্যাশা ছিল সন্দেশখালি খালি হাতে ফেরাবে না। তবে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যে যে দুস্তর ব্যবধান তা সম্ভবত মর্মে মর্মেই বুঝল বিজেপি। ভোটবাক্সে যথারীতি বইল সবুজ-ঝড়। সম্ভবত সর্বাধিক ব্যবধানে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম। উত্তর ২৪ পরগনার দ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দারা বুঝিয়ে দিলেন, মোদি নন, দিদিই তাঁদের ভরসাস্থল।

২০২৪-এর লোকসভা ভোটে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট লোকসভার(Basirhat Lok Sabha Election Result) অন্তর্গত দ্বীপ অঞ্চল সন্দেশখালি। ওই এলাকার একটা বড় অংশের মানুষের পেশা কৃষি। বিঘার পর বিঘা জমি, ভেড়ি রয়েছে অনেকের। কেউ অন্যের জমিতে চাষ করেন। চলতি বছরে বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইডি অভিযান ও পরবর্তীতে জনরোষ, শিরোনামে এনে দিয়েছিল সন্দেশখালিকে। একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছিল এলাকার তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীর জমি, ভেড়ি দখল থেকে শুরু করে রাতের অন্ধকারে মহিলাদের তুলে নিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছিল। সেই ঘটনা শুধু বাংলা নয়, দেশজুড়ে চর্চায় এসেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে বেশি শব্দ খরচ করেননি। তবে দৃঢ় ভাবেই দাবি করা হয়েছিল, যে, যা অভিযোগ উঠছে তার সবটা ঠিক নয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ফের একবার মোদি সরকার! ৫০০ বছর আগে কী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন কালদ্রষ্টা নস্ট্রাদামুস?]

ভোটের দিন এগোতে না এগোতেই দেখা গেল, বাংলা দখলে বিজেপির মোক্ষম অস্ত্র হয়ে উঠেছিল এই সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। বিজেপির প্রচারে বারবার ফিরে এসেছিল সন্দেশখালি-প্রসঙ্গ। মূলত এই একটি জনপদকে কেন্দ্র করেই কুশাসনের অভিযোগে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করার পরিকল্পনা নিয়েছিল গেরুয়া শিবির। বসিরহাট আসনটি নিশ্চিত করতে প্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে। ভূমিকন্যাকে অবলম্বন করেই ভোটের অঙ্ক কষতে চেয়েছিল পদ্মশিবির। অনেকেই তখন বলেছিলেন যে, প্রার্থী নির্বাচনই ছিল মোদির মাস্টারস্ট্রোক। বাস্তবে অবশ্য তা ব্যুমেরাং হয়ে গিয়েছে। বসিরহাটের বাকি ৬টি বিধানসভা তো বটেই, সন্দেশখালিতেও বিরাট ব্যবধানে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম।

ভোটবাক্সের এই সবুজঝড় কার্যত বুঝিয়ে দিল, শুধু প্রার্থী নির্বাচনেই ভোটের যুদ্ধ জেতা যায় না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। অভিযোগের তোড়ে এক সময় খানিকটা যেন ব্যাকফুটেই ছিল রাজ্যের শাসকদল। তবে, হাওয়া ঘুরতে শুরু করে কিছুদিনের মধ্যেই। একাধিক স্টিং ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে যা প্রশ্ন তুলে দেয় অভিযোগের সত্যতা নিয়ে। যত দিন গড়ায় বাংলার মানুষ যেন চিহ্নিত করে ফেলে ‘অপপ্রচার’। ফলত যে সন্দেশখালিকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল বিজেপি, সেই তিরেই বিদ্ধ হতে হল পদ্মবাহিনীকে। এমনকী ঘরের মেয়ে রেখাও ঘররক্ষা করতে পারলেন না। ভোটের ফল জানাল, গোটা বাংলা যদি এক তারে বাঁধা থাকে, সন্দেশখালি সেখানে ব্যতিক্রমী ও বিচ্ছিন্ন হয়ে দ্বীপ হয়ে থাকতে চায় না। মমতা-অভিষেক যুগলবন্দি বাংলায় যে অপ্রত্যাশিত সবুজায়ন ঘটিয়েছে, সন্দেশখালির জনতার মনও সেই পথেই। অতএব এবারের মতো সন্দেশখালিতে খালি হাতেই ফিরতে হল বিজেপিকে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement