ফাইল চিত্র
গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: সবে চৈত্রের শুরু। বাকি এখনও আস্ত গরমকাল। আর এরই মধ্যে শুখা পরিস্থিতি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। গ্রীষ্মের দাবদাহ শুরু হওয়ার আগেই জলের সংকটে ভুগতে শুরু করেছে বসিরহাট (Basirhat) পুরসভার ৪ থেকে ২১ অধিকাংশ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। অভিযোগ, বসিরহাট পুরসভার টাইম কলের জলের ট্যাব খুলতেই, ‘পচা দুর্গন্ধ জল আসছে।’ কোথাও আবার কয়েক ঘণ্টা পাম্প চালানোর পরেও উঠছে না জল। কেউ বা পাচ্ছেন ‘পাক গোলা জল’। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এমনই জল যন্ত্রণায় ভুগছেন আপামর বসিরহাটবাসী।
সীমান্তবর্তী শহর বসিরহাট পুরসভার ২৩ টি ওয়ার্ড। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে ইছামতি নদী। তারই কোল ঘেঁষে এই পুরসভার অবস্থান। নদী তীরবর্তী হওয়ার সত্বেও বিগত বাম আমলে জল সমস্যা নিয়ে যেভাবে মানুষ জেরবার ছিল, আজও সেই জল যন্ত্রণায় একদিকে যেমন কাতর, অন্যদিকে ক্ষোভে ফুঁসছে শহরবাসী। শহরবাসীর দাবি, দেড়-দুই কিলোমিটার দূরে আনতে যেতে হয় পানীয় জল। সেখানে নাকি গভীর নলকূপ বসানো। তাও জলের পাত্র পিছু টাকা দিয়ে সেই জল মেলে। কিন্তু তাতেও ভয় কাটে না আর্সেনিকের।
পাত্রে-পাত্রে জল ভরলেই লাল-হলুদ জল দেখে আঁতকে ওঠে প্রাণ। কিন্তু উপায় নেই। এই জলই ভরসা করে চলছে জীবন। বাড়িতে থাকা নলকূপ খুব একটা গভীর নয়, তাই খেতে ভরসা পাওয়া যায় না। তবে বাড়ির অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে হয় ওই জলই, ফলে বাড়ি ঘরদোর, বালতি-কলসি সবই আর্সেনিকের ছোঁয়ায় লালচে। কিন্তু উপায় নেই। এভাবে যত দিন চলা যায়। এরই মধ্যে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পুরসভার পাইপ লাইনের জল সংকট চলছেই।
এর দায় অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দোপাধ্যায়। বসিরহাট হাই স্কুল মাঠের পাশে ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে তাঁর বাড়ি। তিনিও জানান, “আমার বাড়িতেও দীর্ঘদিন ধরে জল নেই।” এর জন্য অবশ্য তিনি দায়ী করেছেন ভূগর্ভস্থ জলের সমস্যাকে। তিনি বলেন, “এই জল সংকট মেটাতে দুটি প্রজেক্টের কাজ চলছে। সেগুলো শেষ হলে এই জল সমস্যা মিটবে।” কিন্তু কতদিনে এই কাজ শেষ হবে তাও স্পষ্ট করতে পারছেন না তিনি। এবিষয়ে অবশ্য পুরনো জলের পাইপকে দায়ী করেছেন বসিরহাট পুরসভার চেয়ারপার্সন অদিতি মিত্র।
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিনের পুরনো পাইপ ফেটে নোংরা জল ঢুকছে। আমরা অবিলম্বে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।” এনিয়ে বসিরহাট পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কৌশিক দত্ত বলেন, “মার্টিনবার্ণ রোড সংস্কারের কাজ চলছে তার জন্য একাধিক জায়গায় পাইপ লাইনের সমস্যা হয়েছে। আমরা দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” এদিকে এই জল সংকটের সরব হয়েছে পুরসভাবাসী। জলের আরেক নাম জীবন একথা মাথায় রেখে তাঁদের দাবি, “হয় আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ জল দাও, তা না হলে ‘গদি’ ছাড়ো।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.