Advertisement
Advertisement

Breaking News

করোনা ভাইরাস

ডাক্তার মেয়েকে নিয়ে গ্রামে করোনা-গুজব, সামাজিক বয়কটের মুখে পরিবার

বসিরহাটের ঋতুপর্ণা দিল্লির হাসপাতালে কর্মরত।

Basirhat doctor's family stgmatized as daughter practices medicine in Delhi
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:March 17, 2020 1:40 pm
  • Updated:March 17, 2020 1:52 pm  

জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: মেয়ে চিকিৎসক। এই মুহূ্র্তে দিল্লির কস্তুরীবাগ হাসপাতালে কর্মরত। করোনা সংক্রমণ নিয়ে সংকটকালে জনসেবার ব্রতে তিনি বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। কিন্তু বসিরহাটের দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামে সেই খবর পৌঁছল সম্পূর্ণ অন্যভাবে। পাড়া-প্রতিবেশীরা ভাবলেন, ডাক্তার মেয়ে নিজেই করোনায় আক্রান্ত। তাই ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে ওই পরিবারকেই একঘরে করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে। ওই এলাকায় জনসচেতনা বাড়াতে বারবার গুজবে কান না দেওয়ার বলা হলেও, লাভ যে বিশেষ হচ্ছে না, এটাই তার প্রমাণ।

Corona-Family Basirhat
সন্দেহের চোখে এই বাড়িই

বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানা এলাকার দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের বাসিন্দা ঋতুপর্ণা মণ্ডল। চিন ফেরত এই চিকিৎসক এখন কর্মরত দিল্লির কস্তুরীবাগ হাসপাতালের ট্রেনিং সেন্টারে। মা রেণুকা মণ্ডল ধান্যকুড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুপারভাইজার। বাবা এবং বোন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। এমন শিক্ষিত, সম্ভ্রান্ত পরিবারই এখন প্রায় একঘরে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য! ছুটি নেই রাজ্যের পলিটেকনিক ও আইটিআইগুলিতে]

কারণ, ঋতুপর্ণা যে দিল্লির হাসপাতালে চিকিৎসা করছেন, তা শুনেই প্রতিবেশীরা ভেবেছেন যে মেয়ে নিজেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। তাই দিনরাত ফোন করে সবাই ঋতুপর্ণার খোঁজ নিচ্ছেন। কথা বলার সময়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও তাঁর পরিবারের সংস্পর্শ যে এড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিবেশীরা, তা বেশ টের পেয়েছেন মা, বাবা, বোন। বারবার তাঁদের সেই ভুল ধারণা ভাঙানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এমনকী একথা শোনার পর ঋতুপ্রণা নিজে ভিডিও বার্তায় সকলের উদ্দেশে জানিয়েছেন, “গুজবে কান দেবেন না। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি, আমার কর্মস্থলে রয়েছি। যাঁরা এই ধরনের গুজব রটাচ্ছেন, তাঁরা সম্পূর্ণ না জেনেই করছেন।”

Corona-Doc-Basirhat
ডা: ঋতুপর্ণা মণ্ডল

এতেও সমস্যা মেটেনি। করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্য হিসেবে ঋতুপর্ণার পরিবারকে এড়িয়ে চলছেন সকলে। ওই বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন বলে সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে কোহিনুর বিবি নামে এক মহিলাকেও। নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: বানচাল পাচারের ছক, নগদ ৬৫ লক্ষ টাকা-সহ গ্রেপ্তার দুই আন্তর্জাতিক সোনা পাচারকারী]

এসবের জেরে রীতিমত বিরক্ত ঋতুপর্ণার মা রেণুকা দেবী, যিনি নিজেও একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁর আবেদন, “এই ঘটনা ঘটাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হোক। আমি একজন স্বাস্থ্যকর্মী, আমার পরিবারের অনেকেই চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত। আমরা মানুষজনকে সচেতন করার জন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ ইতিমধ্যে নিয়েছি। যেভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ দিয়েছে। তাতে এই ধরনের গুজব মানা যায় না।” খোলাপোতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপরেশ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক থাকার কথা বলছেন, গুজব না ছড়ানোর কথা বলছেন, সেখানে এমন ঘটনা বরদাস্ত হবে না। গুজব রটানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement