আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: সন্তান নেই। একমাত্র সঙ্গী স্ত্রী। কিন্তু, তিনিও দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই শয্যাশায়ী। চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। তাই নিজের জীবনেই ইতি টানলেন এক প্রৌঢ়। বাড়ি থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরে।
[স্ত্রীকে খুনের পর আত্মঘাতী বৃদ্ধ, বেহালায় দম্পতির রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্য]
আত্মঘাতী ওই প্রৌঢ়ের নাম বরুণ চট্টোপাধ্যায়। বাড়ির ইছাপুরের মায়াপল্লীতে। একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরি করতেন বরুণবাবু। পরিবারের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী স্ত্রী রমা চট্টোপাধ্যায়। ওই দম্পতি নিঃসন্তান। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সংসার যাবতীয় কাজ করাই শুধুই নয়, স্ত্রীকে দেখাশোনাও করতেন বরুণবাবু। প্রথমদিকে সাধ্যমতো চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। মাঝে কিছুটা সুস্থ হলেও, সম্প্রতি ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রমা চট্টোপাধ্যায়। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছিল, যে বাধ্য হয়েই স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে এসেছিলেন ওই প্রৌঢ়। স্ত্রী দীর্ঘ অসুস্থতায় ক্রমেই একা হয়ে পড়ছিলেন বরুণবাবু। স্ত্রীকে সুস্থ করতে না পারায় মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন।
[বাগুইআটিতে দুঃসাহসিক ডাকাতি, মহিলাকে বাথরুমে আটকে সর্বস্ব লুট]
শনিবার বিকেলের পর থেকে আর বাড়ির বাইরে বেরোননি বরুণ চট্টোপাধ্যায়। ইছাপুরের মায়াপল্লীতে রাস্তা পাশেই বাড়ি ওই দম্পতির। একটি ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন বরুণবাবু। আর একটি খালিই থাকত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধে নাগাদ ওই ঘরের জানলার দিয়ে ওই প্রৌঢ়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান তাঁরা। খবর দেওয়া নোয়াপাড়া থানায়। মৃতদেহটি উদ্ধার করে। ঘটনায় এলাকার শোকের ছায়া।
[বাবার কবিতা চুরির প্রতিবাদ, মেয়ের ছবি ছড়াল পর্ন সাইটে]
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ শহরের প্রবীণরা ভাল নেই। শুধু বরুণ চট্টোপাধ্যায়ই নন, একাকীত্ব আর মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে অনেকেই। দিন কয়েক আগেই বেহালায় এক দম্পতির মৃত্যু ঘির দানা বেঁধেছিল। প্রাথমিক তদন্ত অনুমান, স্ত্রীকে গলা কেটে খুন করার পর, আত্মঘাতী হয়েছেন রাজ্য সরকারের অবসরপ্রাপ্তকর্মী রথীন্দ্র রায়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রথীন্দ্রবাবুর স্ত্রী মীনাক্ষীদেবী দীর্ঘদিন ধরেই শয্যাশায়ী। দম্পতির ছেলে কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। মেয়ের অবশ্য কলকাতাতেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখেন না তিনি। তাই বন্ধুহীন জীবন কাটাতে কাটাতে মানসিক অবসাদ ভুগছিলেন রথীন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী মীনাক্ষীদেবী।
[সাবধান! সামান্য ব্রণ বা ফুসকুড়ি থেকে শরীরে গজাতে পারে ‘শিং’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.