অর্ণব দাস, বারাকপুর: আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কি ফের ফুলবদল করতে চলেছেন অর্জুন সিং? আবারও কি হাতে তুলে নিতে চলেছেন তৃণমূলের দলীয় পতাকা? রবিবার দুপুরে ‘কাউন্টডাউন শুরু’র ইঙ্গিত দিয়ে দলবদলের জল্পনা আরও উসকে দিলেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ।
রবিবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্জুন সিং (Arjun Singh) বলেন, “কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও শেষ, কোথাও শুরুর কাউন্টডাউন চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো কলকাতায় যাব। কিছু হলে সব জানতে পারবেন।” বারাকপুরের সাংসদের এই মন্তব্যের পর অনেকেই মনে করছেন, রবিবারই হয়তো বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন অর্জুন সিং। কারণ কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে আসবেন। তারপরই জল্পনার অবসানের সম্ভাবনা। অর্থাৎ ফুলবদল করবেন বিজেপি সাংসদ। তিনি নাম লেখাবেন ঘাসফুল শিবিরে। তবে দলবদলের সম্ভাবনার কথা এখনও মানতে নারাজ বিজেপি সাংসদ। বারাকপুর থেকে কলকাতায় আসার কথা স্বীকার করে নেন অর্জুন। তবে কলকাতায় কেন আসছেন, সে কারণ জানাননি।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে দলবদলের জল্পনার মাঝে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন অর্জুন। ঘাসফুল শিবিরের জন্মলগ্ন থেকে তিনি পাশে ছিলেন বলেই দাবি। ‘রাজনীতির বাইরে’ও মমতার সঙ্গে তাঁর বরাবর সম্পর্ক রয়েছে বলেই জানান অর্জুন। পাশাপাশি জল্পনার আগুনে ঘৃতাহুতি দেওয়ার মতো তিনি বলেন, “রাজনীতিতে সব সম্ভব।” বারাকপুরের সাংসদের প্রত্যেকটি কথাই যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
পাটশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে দিনকয়েক আগেই সুর চড়িয়েছিলেন অর্জুন সিং। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। দফায় দফায় দিল্লিতে যান অর্জুন। পীযূষ গোয়েল থেকে জেপি নাড্ডা – সমস্যা সমাধানে প্রায় সকলের সঙ্গে কথা বলেন। লাগাতার আন্দোলনের জেরে অবশেষে কাঁচাপাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র। তবে কি সেই ‘বিদ্রোহে’র জেরেই দলবদলের ভাবনা? এ প্রসঙ্গে যদিও ধোঁয়াশা এখনও জিইয়ে রাখলেন অর্জুন। তিনি বলেন, “বিজেপিতে (BJP) থাকতে চাইছি না। বিজেপি রাখতে চাইছে না। বিজেপিতে থাকব কিনা, তা বলবে সময়। আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আন্দোলনে যে পাশে ছিলেন তাঁকেও ধন্যবাদ। যে বিরুদ্ধে গিয়েছেন তাঁকেও ধন্যবাদ। আমার দাবির যতটুকু মানা হয়েছে, ততটুকুই ভাল।”
অর্জুন সিংয়ের দলবদলের জল্পনা নিয়ে মুখ খুলতেই চান না রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। যদিও দিলীপ ঘোষকে নিয়ে কিছু বলতে নারাজ অর্জুন। তাঁর মতে, “দিলীপ ঘোষকে যা বলার, তা বলবেন রাজ্যবাসী। উনি আমার শ্রদ্ধেয়। বারাকপুরের মানুষ আমার সঙ্গে আছেন। আমি মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করি।” অর্জুন সত্যিই দলবদল করেন কিনা, সেদিকেই এখন নজর সকলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.