সৌরভ মাজি, বর্ধমান: দীর্ঘদিন পর বরের সঙ্গে দেখা। খানিকটা হঠাৎই। কাকতালীয়ভাবে একই বাসের যাত্রী ছিলেন বর্ধমানের এই দম্পতি। এতদিন পর স্বামীকে চোখের সামনে দেখেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন স্ত্রী। কলকাতা থেকে বাসেই বরকে ধরে মারতে মারতে নিয়ে যান বর্ধমানে। তারপর বর্ধমানে পুলিশ লাইন মোড়ে একটি পোস্টে বেঁধে মারধর করা হয় যুবককে। শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় বর্ধমানে। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে ওই যুবককে।
জানা গিয়েছে, তিন বছর প্রেম করার পর ২০০৮ সালে শালবাগানের বাসিন্দা মিতা করের সঙ্গে বিয়ে হয় অনিরুদ্ধ করের। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। কিন্তু বিয়ের কয়েকবছর পর থেকেই বনিবনা হচ্ছিল না স্বামী-স্ত্রীর। বিষয়টি পুলিশ-আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। মিতাদেবীর অভিযোগ, বছর পাঁচেক আগে তাঁকে গলা টিপে ধরে মেরে ফেলার চেষ্টা করে তাঁরা স্বামী। তাঁকে ও মেয়েকে বাড়ি থেকে মেরে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে বাপের বাড়িতে থাকেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, “আমরা পুলিশে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমাকে-মেয়েকে কোনওরকম খোরপোষও দেয় না।” অনিরুদ্ধবও স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, “আমাদের বিয়ে হয়েছিল। কোর্টে কেসও চলছে। আজ বাসে আমাকে মারধর করেছেওরা। দীর্ঘক্ষণ বেঁধে রেখেছে।”
জানা গিয়েছে, শনিবার পরিবারের কয়েকজনের সঙ্গে কলকাতা গিয়েছিলেন মিতাদেবী। ফেরার সময় বর্ধমানগামী বাসে অনিরুদ্ধকে তাঁরা দেখতে পান। সেখানে দুইপক্ষের বিবাদ শুরু হয়। বাসেরই কয়েকজন যাত্রী সেই ভিডিও তোলেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হয়ে যায়। তাতে দেখা গিয়েছে অনিরুদ্ধবাবুকে ধরে টানাহ্যাঁচড়া করছে কয়েকজন। মিতাদেবী কয়েকবার অনিরুদ্ধবাবুকে চড়ও মেরেছেন। তার পর বাস বর্ধমানের পুলিশ বাজারে থামলে মিতাদেবী ও তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন অনিরুদ্ধবাবুকেও সেখানে জোর করে নামান। তারপর তাঁকে বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখা হয় একটি পোস্টে। সেখানেও জুতো দিয়ে তাঁকে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। মিতাদেবী অবশ্য দাবি করেছেন, বাসে তাঁকে অনিরুদ্ধবাবুই মারধর করেছে। যদিও বাসের যাত্রীদের ভিডিওতে উলটো ছবি দেখা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.