সৌরভ মাজি,বর্ধমান: শীর্ষ আদালত জানিয়েছে পরকীয়া অপরাধ নয়। কিন্তু পরকীয়ার ঘটনা প্রকাশ পেলে সংসারে তা কতটা মর্মান্তিক হতে পারে তার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমান জেলায় রায়না। বন্ধুর সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পেরে বাধা দিতে গিয়েছিলেন স্বামী। বন্ধুকে বলেছিলেন স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে। উত্তরে শুনতে হয়, ‘পুলিশ-আদালত করেও কিছু লাভ হবে না, সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে পরকীয়া অপরাধ নয়।’ আর তাতেই দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন স্বামী। রাগের বশে বন্ধুর গলায় ছুরি চালিয়ে দিলেন তিনি। আপাতত শ্রীঘরে স্বামী।
রায়না থানার ভগবতীপুরের শ্রীমন্ত রায় জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে বন্ধু ত্রিদীপ রায়ের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। স্ত্রী ও বন্ধুকে বাধা দেন তিনি। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে রায়নার ধারান এলাকার শিবতলায় ত্রিদীপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শ্রীমন্ত। সেখানে বন্ধু ত্রিদীপের কাছে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে ফেলতে অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু ত্রিদীপ সম্পর্ক চালিয়ে যাবে বলে সাফ জানিয়ে দেয় শ্রীমন্তকে। বলে, পুলিশে গিয়েও কোনও লাভ হবে না। কারণ সুপ্রিম কোর্ট পরকীয়াকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। এরপরই দুইজনের মধ্যে বচসা বাধে। বন্ধুর এই অপমান সহ্য করতে পারেননি শ্রীমন্ত। আচমকা তাঁর পকেটে থাকা ছুরি বের করে ত্রিদীপের গলায় কোপ বসিয়ে দেন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ত্রিদীপ। তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন জখম যুবকের বাবা অমল রায়। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সোমবার রাতেই বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত শ্রীমন্তকে। মঙ্গলবার তাঁকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ধৃতকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন আদালত চত্বরে শ্রীমন্ত বলেন, “স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করলেও শোনেনি ত্রিদীপ। উলটে আমাকে বলে থানা-পুলিশ-আদালতে গেলেও কিছু হবে না। রাগে মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তাই এই কাজ করে ফেলেছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.