Advertisement
Advertisement

Breaking News

Barddhaman Medical College

প্লাস্টিকের ব্যাঙ গিলে তীব্র শ্বাসকষ্ট, একরত্তির প্রাণ বাঁচাল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ

কঠিন অস্ত্রোপচারেই নতুন জীবন পেল ওই শিশু।

Barddhaman Medical College saved a child's life | Sangbad Pratidin
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:December 30, 2022 8:10 pm
  • Updated:December 30, 2022 8:10 pm  

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: যা পায় তাই মুখে দেয়। একরত্তির সেই জ্ঞানটাও নেই। ব্যাঙের পা মুখে পুরে গিলেও নেয়! আসল ব্যাঙের নয়, প্লাস্টিকের। আর সেটাই গিয়ে শ্বাসনালী ও খাদ্যনালীর মুখে আটকে যায়। তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত ত্রাতা হয়ে ওঠে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। মাঝরাতে অস্ত্রোপচার করে ওই শিশুর গলা থেকে বের করা হয় প্লাস্টিকের ব্যাঙের পা। জীবন ফিরে পায় শিশুটি। আপাতত হাসপাতালের শিশু বিভাগের আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে ওই শিশুটিকে। শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির বাড়ি কাটোয়ায়। বুধবার গভীর রাতে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় শিশুটিকে। তার তীব্র শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। অক্সিজেনের স্যাচুরেশন লেভেল ৬০ শতাংশে নেমে গিয়েছিল। হাসপাতালের নাক, কান, গলা (ইএনটি) বিভাগে আনা হয়। শিশুটির মা চিকিৎসকদের জানান, কয়েকদিন আগে কিছু একটা মুখে দিয়েছিল তার পর থেকেই তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। চিকিৎসক ঋতম রায় জানান, তাঁরা বুঝতে পারেন অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। দেরি না করে মাঝরাতেই ইএনটি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে। সেখানে এন্ডোস্কোপি করে ‘ফরেন বডি’ অর্থাৎ প্লাস্টিকের ব্যাঙের পায়ের অবস্থান চিহ্নিত করা হয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: স্বামীর পর গ্রেপ্তার দেওর, বাগনানে অভিনেত্রীর হত্যাকাণ্ডে আরও ঘনাল রহস্য]

ঋতম রায়, অসীম সরকার, শাশ্বত সরকার, রিয়া সিনহা-সহ ৬ শল্য চিকিৎসকের টিম গড়া হয়। অ্যানাস্থেটিক্স তীর্থাশিস মণ্ডল এবং শিশু বিভাগের চিকিৎসক টিএন ঘোষ ও তাঁর পুরো টিমের সহায়তা নেওয়া হয়। পাশাপাশি, শিশুটি এতটাই সংকটজনক ছিল যে তার জন্য আইসিইউ প্রস্তুত রাখা হয়েছিল আগে থেকেই। মাঝরাতেই অস্ত্রোপচার করে বড় আকারের ওই প্লাস্টিকের ব্যাঙের পা বের করেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসা পরিভাষায় এই অস্ত্রোপচারকে ব্রঙ্কোস্কোপি ও অ্যাসোফ্যাগোস্কোপি বলা হয়ে থাকে। বিশেষ পদ্ধতিতে ওই বস্তুটি বের করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন ইএনটি বিভাগের শিশু ওয়ার্ডের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। ঋতমবাবু শুক্রবার জানান, শিশুটি দ্রুত উন্নতি করছে। পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলে ছেড়ে দেওয়া হবে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে এখানকার ইএনটি বিভাগে নিয়মিতভাবেই এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। বহু শিশুর প্রাণ রক্ষা পেয়েছে ব্রঙ্কোস্কোপি-সহ অন্যান্য অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। ১৩ মাসের শিশুর ফুসফুস থেকে মোবাইল চার্জারে কর্ডের একাংশ ঢুকে গিয়েছিল। বের করেছিলেন এখানকার চিকিৎসকরা। এছাড়াও দেড় বছরের শিশুর গলা থেকে মাংসের হাড়ের টুকরো, ৫ বছরের শিশুর শ্বাসনালিতে আটকে থাকা হুইশেল (বাঁশি) অস্ত্রোপচার করে বের করে প্রাণ বাঁচান এখানকার চিকিৎসকরা। গত সপ্তাহে একরত্তির‌ ফুসফুসে ইঁদুরের দাঁত ঢুকে গিয়েছিল। ব্রঙ্কোস্কোপি করে বের করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুদের এই ধরনের অস্ত্রোপচারের রাজ্যের মধ্যে নজির গড়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল।

[আরও পড়ুন: পন্থের দুর্ঘটনার পর টাকা কুড়তে ও ভিডিও করতেই ব্যস্ত স্থানীয়রা! ‘মসিহা’ হয়ে আসেন বাসচালক]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement