অর্ণব দাস, বারাসত: ঋণ পরিশোধ (Loan) করার চাপে কিডনি বিক্রি করতে চেয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিলেন এক মহিলা! বৃহস্পতিবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বারাসতের (Barasat) দেগঙ্গা এলাকায়। বছর খানেক আগে নেওয়া ৫০ টাকা ঋণ শোধ করতে গিয়ে দিশেহারা দশা তাঁর। দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে তাই এমন এক সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে চাইছেন মৌমিতা সাহা নামে এই মহিলা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৌমিতা সাহা একজন মানবাধিকার কর্মী (Human activist)। বছর ২৫ আগে তাঁর বাবা, মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। মৌমিতার বিয়ে হয় বর্ধমানে। কিন্তু সংসার সুখের হয়নি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কয়েক বছর তিনি বর্ধমানেই (Burdwan) ছিলেন। মানবাধিকার কাজের সূত্র ধরেই তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দেগঙ্গায় এসেছিলেন। বিগত চার বছর ধরে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা ২ পঞ্চায়েতের দেবালয়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে একাই থাকতে শুরু করেন।
বছরখানেক আগে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। অভিযোগ, নির্দিষ্ট সময়ে সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় লাগাতার হুমকিতে মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। দিশাহীন হয়ে পড়ে তিনি কিডনি (Kidney) বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বেশ কয়েকটি বেসরকারি নার্সিংহোমেও তিনি কিডনি বিক্রির জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। তাই শেষে জেলাশাসকের (DM) কাছেই কিডনি বিক্রির অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেন মৌমিতা।
এমন পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ”বসিরহাটের (Basirhat) এক ব্যক্তির থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। পাওনাদার খুব চাপ দিচ্ছে। টাকা জোগাড় করতে না পারলে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে একটি কিডনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর আগে বিভিন্ন নার্সিংহোমে গিয়েছিলাম কিডনি বিক্রির জন্য। কিন্তু কোথাও অনুমতি দেয়নি। তাই জেলাশাসকের কাছে অনুমতি চেয়ে লিখিত দিয়েছি।”
তবে মৌমিতার সিদ্ধান্তের সবটাই এত হতাশাজনক নয়। কিডনি বিক্রির টাকায় ঋণ পরিশোধ করার পর একটি এনজিও (NGO) করার ভাবনা রয়েছে মৌমিতার। সেখান থেকেই মহিলাদের স্বনির্ভর করতে চান বলেও জানান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.