টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: রাজস্থানের পর এবার কেরল। ফের কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে গিয়ে প্রাণ গেল এ রাজ্যে এক শ্রমিকের। মৃত হেমন্ত রায়ের বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাসে। ছবি দেখে তাঁর মৃতদেহ শনাক্ত করেছেন বাড়ির লোকেরা। কেরল পুলিশ আত্মহত্যা বলে দাবি করলেও, তা মানতে নারাজ তাঁরা। ইন্দাস থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বুধবার মৃতদেহ আনা হবে বাঁকুড়ার বাড়িতে। এদিকে, মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় জনসভায় ভিনরাজ্যে বাঙালিদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিনরাজ্যে কর্মরতদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘আতঙ্কে থাকলে ফিরে আসুন। বাংলায় কাজের অভাব নেই।’
[‘লাভ জেহাদ’-এর বলি মালদার যুবক, জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ভিডিও ভাইরাল]
ইন্দাসের রোল গ্রাম পঞ্চায়েতের ছোঁয়ানি গ্রামে বাড়ি হেমন্ত রায়ের। কেরলে দিনমজুরের কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাস্তা থেকে হেমন্তের নলি কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। মৃতদেহের ছবি তুলে বাঁকুড়ার পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। সেই ছবি নিয়ে হেমন্ত রায়ের বাড়িতে যায় ইন্দাস থানার পুলিশ। ছবি দেখে মৃতদেহ শনাক্ত করেন বাড়ির লোকেরা। কিন্তু, ভিনরাজ্যে কীভাবে মারা গেলেন বাঁকুড়ার হেমন্ত? বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা জানিয়েছেন, কেরল প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন বছর তেইশের ওই যুবক। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ হেমন্তের বাড়ির লোকেরা। তাঁদের দাবি, হেমন্তকে গলার নুলি কেটে খুন করা হয়েছে। ইন্দাস থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তাঁরা।
[আফরাজুলের পরিবারকে চাকরির আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর, মালদায় যাচ্ছে সংসদীয় দল]
বাঁকুড়ার ইন্দাসের বাড়িতে থাকেন হেমন্তের বৃদ্ধ বাবা, স্ত্রী ও দু’বছরের সন্তান। মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু খবরে শোকে ছায়া নেমেছে এলাকায়। বাড়িতে ভিড় করেছেন আত্মীয়-পরিজন ও প্রতিবেশীরা। পুত্রশোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন বাবা অনিন্দ্য রায়। শোকের পাথর হয়ে গিয়েছে স্ত্রী বিষ্ণুদেবী। তাঁর দাবি, ঘটনার দিন সকালেও স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন তিনি।
[প্রেমের টানে সীমান্ত পেরিয়ে জলপাইগুড়িতে, কী হাল হল বাংলাদেশি যুবকের?]
এদিকে, মঙ্গলবার পুরুলিয়ার জনসভায় ভিনরাজ্যে বাঙালিদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, আতঙ্কে থাকলে ফিরে আসুন। বাংলায় কাজের অভাব নেই। প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে রাজস্থানে লাভ জেহাদের অভিযোগে মালদহের প্রৌঢ় মহম্মদ আফরাজুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তারপর জ্যান্ত পুড়িয়ে মারে এক দুষ্কৃতী। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে গোটা দেশে। নিহতের পরিবারকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
[সোশ্যাল মিডিয়ায় ইচ্ছেমতো পোস্ট, অজান্তে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন কি?]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.