সৌরভ মাজি, বর্ধমান: লাভের গুড় খেয়ে নিচ্ছে পিঁপড়েয়। কন্যাশ্রী প্রকল্পে লাভবান হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। প্রকল্পের সুবিধা পেলেও ভাতার অঙ্কের প্রায় অর্ধেকটাই কেটে নিচ্ছে ব্যাংক। পূর্ব বর্ধমান জেলায় বহু পরীক্ষার্থী এর ফলে সমস্যায় পড়েছে। ব্যাংকের দাবি, মিনিমাম ব্যালেন্স না থাকার কারণেই নিয়মানুযায়ী চার্জ কাটা হয়েছে।
[ রানিগঞ্জের ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব কেন্দ্রের ]
বর্ধমান শহরের ইছলাবাদ বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়।এই স্কুলের বহু ছাত্রীর কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে চার্জ কেটে নেওয়া হয়েছে। ৫০০ টাকা ভাতার টাকা পাওয়ার কয়েকমাস পর পাসবই আপডেট করাতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ অভিভাবকদের। কোনও মাসে ৯২ টাকা, কোনও মাসে ৭৫ টাকা করে চার্জ কেটে নিয়েছে ব্যাংক। ফলে ভাতার অর্ধেক টাকাই ব্যাংক চার্জ হিসেবে কেটে নিয়েছে। অভিযোগ, এর ফলে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ছাত্রীরা। রাজ্য সরকার যে লক্ষ্যে কন্যাশ্রীদের এই সুবিধা দিচ্ছে সেটাও বিঘ্নিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
[ অসুস্থ সদ্যোজাতকে পাশে নিয়েই রাত জেগে পরীক্ষার প্রস্তুতি গৃহবধূর ]
এই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী পূজা দত্ত। বাড়ি শহরের শাঁখারিপুকুর চণ্ডীতলা এলাকায়। তাঁর বাবা বাপি দত্ত জানান, মেয়ের কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্টে প্রথমে ৫০০ টাকা কন্যাশ্রীর ভাতা ঢুকেছিল। পরের বছর ৭৫০ টাকা ঢোকে। সম্প্রতি তিনি পাসবই আপডেট করাতে গিয়ে দেখেন ছয় মাসে প্রায় ৪৫০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্ট থেকে। মাসিক মিনিমাম ব্যালেন্স না থাকার কারণে এই টাকা কাটা হয়েছে বলে ব্যাংকের তরফে জানানো হয়েছে। বাপিবাবু এই ব্যাপারে ব্যাংকের শাখা প্রবন্ধককে চিঠিও দিয়েছেন কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোনওরকম সুরাহা হয়নি।
[ ইচ্ছাশক্তির জোরে প্রতিবন্ধকতাকে জয়, মায়ের কোলে চেপেই পরীক্ষাকেন্দ্রে পড়ুয়া ]
শুধু পূজাই নয়, এই স্কুলের অনেক ছাত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকেই এইভাবে কন্যাশ্রীর ভাতার টাকা থেকে চার্জ কেটে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা ভাস্বতী লাহিড়ী। তিনি বলেন, “মেয়েদের উৎসাহ দিতে ভাতা দেওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফে। কিন্তু ব্যাংকের নীতি নিয়ে খুবই চিন্তায় পড়ে গিয়েছি আমরা। মিনিমাম ব্যালেন্স না থাকায় বহু ছাত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিয়েছে ব্যাংক। ফলে কন্যাশ্রী ভাতার টাকার পরিমাণ কমে যাচ্ছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।” ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানান, নিয়ম অনুযায়ী কাটা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাঁদের কিছু করণীয় নেই। পূর্ব বর্ধমান জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের আধিকারিক তথা কন্যাশ্রী প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরি বলেন, “স্কুলের তরফে আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানিয়েছেন, ব্যাংক বললে ওই চার্জ হিসেবে কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দেবে। সমস্যা হবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.