সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘আমি তো এই প্রথম ব্যাঙ্কে এসেছি’, লম্বা লাইনের মধ্যে এক বৃদ্ধের এমন কথা শুনে অনেকেই চমকে উঠতে পারেন৷ তবে চমকাননি অনেক ছাত্রও৷ তাঁরাও প্রথমবার ব্যাঙ্কে এসেছেন৷ উদ্দেশ্য একটাই, টাকা জমা দেওয়া৷ কিন্তু সেখানেই আসলে কাহানি মে টুইস্ট৷ কেননা বৃদ্ধ বা তরুণ, কেউই নিজের টাকা জমা দিতে আসেননি৷ এসেছেন অন্যের টাকা জমা দিতে৷ অর্থাৎ কালো টাকা সাদা করার দায়ে রীতিমতো ভাড়া খাটছে গরিবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট৷
বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে দেশে টাকা ঢোকার যে অভিযোগ ওঠে, তার স্থায়ী ঠিকানা মালদহ৷ কালো টাকা যে এখানে মজুত আছে তা প্রায় ‘ওপেন সিক্রেট’৷ আর তাই প্রধানমন্ত্রীর আচমকা সিদ্ধান্তে ঘোর বিপাকে কালো টাকার কারবারিরা৷ এত টাকা কীভাবে সাদা করবেন তা নিয়ে রীতিমতো ধন্দে তারা৷ আর এর ফলেই ভাড়ায় মিলছে গরিবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট৷ কালো টাকা রুখতে মোদি যতই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করুক না কেন, কালো টাকার কারবারীরা ইতিমধ্যেই বিকল্প পথ খুঁজে পেয়েছে৷ যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে অথচ জমা দেওয়ার মতো টাকা নেই, তাদেরকেই খুঁজে বের করা হয়েছে৷ তাদের অ্যাকাউন্টেই চলে যাচ্ছে কালো টাকা৷ ফলত সরকারি নিয়ম নির্দেশিকা মেনেই গতি হয়ে যাচ্ছে কালো টাকার৷ এভাবেই কেউ কেউ জমা দিচ্ছেন প্রায় ৩ লক্ষ টাকা৷ বিনিময়ে তাঁরা পাচ্ছেন ১০০০ বা ২০০০ টাকা৷ এমনকী এ তালিকা থেকে বাদ নন ভিক্ষুকও৷ কালো টাকা সাদা করার ধুমে এখন তাঁরাও যথেষ্ট কদর পাচ্ছেন৷ কলেজ ছাত্ররাও এই সওদায় ভালো দাঁও ঠুকছেন৷ প্রতি পঞ্চাশ হাজার জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০০০ টাকা করে পাচ্ছেন তাঁরাও৷
ঘটনা কানে যাওয়া মাত্র আতঙ্কিত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ম্যানেজাররা৷ যাঁরা এ কাজ করছেন তাঁদেরকে এ কাজ থেকে বিরত হওয়ার আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা৷ কেননা সাময়িক প্রাপ্তির বশে এতে বড়সড় বিপাকে পড়তে চলেছেন তাঁরা৷ কিন্তু তাঁদের কথায় যে খুব একটা কেউ কর্ণপাত করছে এমনটা নয়৷ আর তাই রমরমিয়েই চলছে অ্যাকাউন্ট ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.