অর্ণব দাস, বারাসত: পাখির চোখ লোকসভা নির্বাচন। আর তার আগে হাবড়ায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের ভোটার কার্ড দেওয়ার আশ্বাস বারাসতের তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাসের। তাঁর মন্তব্য ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুঙ্গে সমালোচনার ঝড়।
বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ডাঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার। সেই উপলক্ষে হাবড়ার ১ নম্বর ব্লকের পৃথিবা এলাকায় একটি দলীয় কর্মসূচির আয়োজন হয়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারাসত সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রত্না বিশ্বাস বলেন, “তিন মাস পরেই লোকসভা নির্বাচন। ভোটার লিস্টের কাজ চলছে। জাকিরদার নির্বাচনী এলাকায় অনেক বাংলাদেশি লোক বসবাস করেন। জাকিরদা লিংকটা ভালো করতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এসেছেন যদি তাঁদের ভোটার লিস্টে নাম তুলতে লিংকের কোনও সমস্যা হয় তাহলে জাকিরদার এই অফিসে এসে যোগাযোগ করবেন। এই কাজটা অতি দ্রুত করবেন। আমরা চাই না একটি ভোটও বাইরে পড়ুক।” তৃণমূল নেত্রী ‘আশ্বাস বাণী’ সোশাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।
তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে উল্লেখিত ‘জাকিরদা’ হাবড়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি। তিনিও ওই বক্তব্যের সময় রত্নাদেবীর পাশেই ছিলেন। রত্না বিশ্বাসের এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দিয়েছেন। এবিষয়ে অযথা জলঘোলা করার চেষ্টা হচ্ছে বলেই দাবি তৃণমূল নেতা জাকির হোসেনের। তিনি আরও বলেন, “আমাদের এলাকায় বেশিরভাগ বাসিন্দাই ১৯৬০-৬৫ সালের পর ওপার বাংলা থেকে এসে বসবাস করছেন। ১৯৯০ সালের আগে ভোটার তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু যেকোনও কারণেই হোক তার পর ভোটার তালিকা থেকে অনেকের নাম বাদ গিয়েছে। সেই সময়ের ভোটার তালিকাগুলি আমরা ইন্টারনেট ঘেঁটে বের করে রেখেছি। যার যার প্রয়োজন তাঁদের দেওয়া হবে। সেই কথাটাকেই উনি লিংক করিয়ে দেবেন বলতে চেয়েছেন।” তাঁর সংযোজন, “আমরা পরিষেবা দিয়ে থাকি, কোনও বেআইনি কাজ করি না। বাংলাদেশি কথাটা না বললেই ভালো হত। মুখ ফসকে উনি বলে ফেলেছেন।”
কী করে ওপার বাংলার নাগরিকদের এই রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে বলতে পারেন একজন তৃণমূল নেত্রী, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠেছে বিতর্কের ঝড়। এবিষয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বেআইনি কাজ করার জন্য মুখিয়ে বসে রয়েছে তৃণমূল। শুধু টাকাটা পেলেই হল।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রত্নাদেবীর মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই যে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল তা বলাই বাহুল্য।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.