ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংয়ের অডিও বার্তার প্রকাশ্যে আসার পরই ফের নতুন করে অশান্ত পাহাড়। পুলিশকে লক্ষ্য ইটবৃষ্টি, এমনকী পড়ুয়াবোঝাই স্কুল বাসও তাদের তাণ্ডবের হাত থেকে রেহাই পেল না।
[রামকৃষ্ণ মিশনে বেনজির হামলা, অভিযুক্ত মোর্চা]
উত্তরকন্যায় দ্বিতীয় সর্বদল বৈঠকে পর এখন পাহাড়ে রীতিমতো কোণঠাসা বিমল গুরুং। মোর্চা সুপ্রিমোর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে পাহাড়। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার এক অডিও বার্তায় পাহাড়ে সবকিছু বন্ধ করে দিতে অনুগামীদের পথে নামার নির্দেশ দেন মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুং। দলের সর্বময় নেতার বার্তা পেয়ে সন্ধ্যায় ময়দানে নেমে পড়েন মোর্চা সমর্থকরা। মিরিকের কাছে মঞ্জুখোলায় তৃণমূল পরিচালিত মিরিক পুরসভার চেয়ারম্যান লাল বাহাদুর রাইয়ের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে গুরুংপন্থীরা। সেসময় অবশ্য গাড়িতে ছিলেন না চেয়ারম্যান। তবে পাথরের আঘাতে গুরুতর জখম হন চেয়ারম্যানের দেহরক্ষী ও গাড়ির চালক। আতঙ্কের পরিবেশ ফেরাতে রাতে দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়ং-সহ পাহাড়ে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চলে।
[গোর্খাল্যান্ড চাই, বাইচুংয়ের সওয়ালে বিতর্ক]
শুক্রবার সকালে অশান্তি চরমে পৌঁছয়। সকাল এগারোটা নাগাদ কালিম্পংয়ে ডম্বরচকে একটি আবাসিক স্কুলের বাসে হামলা চালায় গুরুংপন্থীরা। ওই পড়ুয়াদের মেডিক্যাল চেক-আপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তবে কোনও পড়ুয়া হতাহত না হলেও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় গুরুংপন্থী ১০ জন মোর্চার সমর্থককে আটক করে পুলিশ। পরে কালিম্পংয়ের মোটরস্ট্যান্ড এলাকার ধৃতদের ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, গুরুংপন্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। চলে কাঁদানে গ্যাসও। অন্যদিকে, শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং যাওয়ার পথে, তিস্তা বাজার এলাকায় দশ নম্বর জাতীয় সড়কে দুটি সরকারি বাস আটকায় গুরুংপন্থীরা। জোর করে যাত্রীদের নামানো চেষ্টা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
[পাহাড় জট কাটছে, বনধ প্রত্যাহারের আরজি মুখ্যমন্ত্রীর]
তবে এতকিছুর পরও, শুক্রবার সকাল থেকে পাহাড়ে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। গুরুংয়ের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে জিটিএ দপ্তরে কাজে যোগ দিয়েছেন কর্মীরা। পাহাড়ে সর্বত্রই প্রায় খুলেছে সরকারি অফিস, দোকানপাট। তবে পড়ুয়াদের ওপর এই হামলার ঘটনায় ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েছে মোর্চা। তাদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি থেকে কচিকাঁচারাও কেন ছাড় পেল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পুজোর মুখে গুরুংপন্থীদের এমন মারমুখী মেজাজ পাহাড়ের পরিস্থিতি নতুন করে ঘুলিয়ে দিতে পারে।
[নারদ কাণ্ডে এবার সিবিআইয়ের নোটিস ফিরহাদ হাকিমকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.