রাজা দাস, বালুরঘাট: মাত্র ২০০০ টাকার প্রলোভনে নিজের আধার ও প্যান কার্ড অন্যের হাতে দিয়ে, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় জড়িয়ে পড়লেন এক যুবক। ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশ হানা দিয়েছে ওই ব্যক্তির বাড়িতে। এখন নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে থানা থেকে সাইবার ক্রাইম থানা, জেলা পুলিশ সুপারের অফিস ঘুরে বেড়াচ্ছেন দিলীপ মালি নামে ওই যুবক।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার তিওড় মালিপাড়ার বাসিন্দা দিলীপ, পেশায় দিনমজুর ও ভ্যানচালক। শনিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেন ত্রিমোহিনীর ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা খোকন মালি ও তার মা মাধবী মালির বিরুদ্ধে। যদিও এই ঘটনায় মূলচক্রীর পরিচয় অধরাই থেকে গিয়েছে। দিলীপ মালির অভিযোগ, গত ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে অভিযুক্ত খোকন মালি দিলীপ মালির স্ত্রী কে জানায়, মোবাইল সিমের অফার চলছে। আধার কার্ডের সঙ্গে প্যান কার্ডের সংযুক্তিকরণে ২০০০ টাকা পাওয়া যাবে। গ্রামের গরিব মানুষ ২০০০ টাকার লোভে পড়েই অভিযুক্তদের সাথে স্থানীয় ব্যাঙ্কে যান। আধার ও প্যান কার্ড সংযুক্তিকরণ করেন। তাঁদের অভিযোগ, এরপরই মোবাইলে ভিডিও কল আসে। তাতে এক হিন্দিভাষীর সঙ্গে দিলীপ মালিকে কথা বলিয়ে দেন অভিযুক্তরা। এরপর ২০০০ টাকা পেয়েও যান।
এরপর প্রায় বছরখানেক কেটে যায়। দিনকয়েক আগে হঠাৎ করে দিলীপ মালির খোঁজে দিল্লি থেকে পুলিশ আসে। তাঁরা জানতে পারেন, দিলীপের নামে কলকাতায় একটি ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে দিল্লির এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা করা হয়। লক্ষ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণার দায় এসে পড়ে দিলীপ মালির উপরে। এই ঘটনায় কূল কিনারা না পেয়ে দিলীপ মালি হিলি থানায় অভিযোগ জানাতে যান। সেখান থেকে তাদের বালুরঘাটের সাইবার ক্রাইম থানায় যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়। দিলীপ বাবু জানান, যেহেতু দিল্লি পুলিশ মামলা শুরু করেছে তাদের সেখানেই যেতে হবে। সাইবার ক্রাইম থানা কোনও অভিযোগ নেয়নি। বাধ্য হয়ে শনিবার জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে অভিযোগ জমা দেন দিলীপ মালি।
দিলীপ মালির আত্মীয় কমল মালি বলেন, “দিলীপ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। কিছু না বুঝে প্রতারকদের ফাঁদে পড়েছে।” দিলীপ মালি বলেন, “আমি কোনওদিন কলকাতা যাইনি। কলকাতার ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলব কি করে? সিম কার্ডের অফারে ২০০০ টাকা পাওয়া যাবে বলে খোকন মালি আমাদের আধার ও প্যান কার্ড নেয়। এর পর এক ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলায়। এখন দিল্লি থেকে পুলিশ আসায় জানতে পারি আমার নামে কলকাতায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হই।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.