রাজা দাস, বালুরঘাট: মায়ের মৃত্যুর পর জীবনের চিত্রটাই পালটে গেল আড়াই বছরের দুই যমজ কন্যার। পরিবার ছেড়ে সোজা ঠাঁই হল অনাথ আশ্রমে। মাকে খুন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে বাবা-সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। দুধের সন্তান শ্রেয়সী ও শ্রেয়ায় দায়িত্ব নিতে চাননি দাদু-দিদিমারাও। ঘটনা কুমারগঞ্জের মোহনা এলাকার।
জানা গেছে, মঙ্গলবার পুলিশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে দুই কন্যা সন্তানকে । দাদু হরিশ অধিকারীর হাতে তাদের তুলে দেয়। কিন্তু দাদু, দিদিমারা নাতনিদের নিতে অস্বীকার করেন। এরপর তাদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে তোলার পর তাদের হিলির শিশু অনাথালয়ে পাঠানো হয়। কুমারগঞ্জ থানার ওসি সুদীপ্ত দাস জানান, শিশু দুটিকে দাদুর হাতে তুলে দিতে যান। তবে, তারা নাতনিদের দায়িত্ব নেবেন না বলে সাফ জানান। যদিও এ বিষয়ে দাদু হরিশ অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে কুমারগঞ্জ মোহনার বাসিন্দা পঙ্কজ মজুমদারের সঙ্গে বিয়ে হয় রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকার অপর্ণার। ২০১৭ সালে তাদের যমজ কন্যা সন্তান হয়৷ অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই দ্বিতীয় বউ অপর্ণার উপর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার চালানো হত। সোমবার রাতেও অপর্ণাদেবীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ৷ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয় কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয় অপর্ণাকে । সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পঙ্কজের বাড়িতে চড়াও হয়। ভাঙচুর করা হয় বাড়ি। আসবাবপত্রও বাড়ি থেকে বের করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। অবরোধ করা হয় কুমারগঞ্জ মোহনা রাস্তা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যায় কুমারগঞ্জ থানার ওসি সুদীপ্ত দাস-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স। পুলিশ গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এদিকে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী পঙ্কজ ও তার বাবা যুধিষ্ঠির মজুমদার এবং পঙ্কজের মা ও ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বুধবার বালুরঘাট আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজত হয়। এদিকে পঙ্কজ ও অপর্ণার আড়াই বছরের যমজ সন্তান শ্রেয়সী ও শ্রেয়াকে পুলিশ উদ্ধার করে। শেষ পর্যন্ত তাদের ঠাঁই হল শিশু অনাথালয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.