রাজা দাস, বালুরঘাট: কালীপুজোর রাতে তো বটেই, বছরভর ভক্তদের খুচরো প্রণামিতে উপচে পড়ে বাক্স। কিন্তু এবার তা নিয়েই বেজায় সমস্যায় পড়ল বালুরঘাটের বুড়া কালী পুজো কমিটি। জমতে জমতে খুচরোর অঙ্ক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এই টাকা কীভাবে নোটে পরিণত করবেন, তা নিয়ে এখন চূড়ান্ত চিন্তিত কমিটির সদস্যরা।
নিত্যদিনের কাজের জন্যও এই বিপুল খুচরো খরচ করতে পারছেন না তাঁরা। কারণ, অনেক বিক্রেতাই তা নিতে চাইছেন না। আবার ব্যাংকও একসঙ্গে এত খুচরো কয়েন নিতে অস্বীকার করায় দিশেহারা কর্তৃপক্ষ। এদিকে, গতবারেরই হাজার হাজার টাকার কয়েন জমে রয়েছে ওই কমিটির হাতে। সব মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার কয়েন কীভাবে নোটে পরিণত করা হবে, তা নিয়ে এখন কার্যত দিশেহারা বালুরঘাট বুড়া কালি পূজা কমিটি।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের তহবাজার এলাকায় রয়েছে জাগ্রত বুড়া কালীমন্দির। ঐতিহ্যবাহী এই দেবীর প্রতি অগাধ বিশ্বাস স্থানীয় বাসিন্দাদের। কালীপুজোর অমাবস্যা তো বটেই, প্রতিদিন দু’বেলা নিয়ম করে পুজো হয়ে থাকে এই কালীবাড়িতে। সেখানে রাখা প্রণামির বাক্সে সারা বছর ধরে সংগৃহীত অর্থ অনেক কাজে আসে বাৎসরিক পূজার আয়োজনের সময়। সারা বছর প্রণামির বাক্স থেকে সংগ্রহ হওয়া অর্থের বেশিরভাগটাই খুচরো কয়েন। রবিবার, কালীপুজোর রাতে আবার অন্তত আশি হাজারের মতো খুচরো ১, ২, এবং ৫ টাকার কয়েন মিলেছে প্রণামিতে। যা নিয়ে কার্যত মাথায় হাত কর্মকর্তাদের।
এই মুহুর্তে খুচরো কয়েন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। নোটবাতিলের পর থেকে প্রয়োজনের তুলনায় ঢের বেশি কয়েন বাজারে ছড়িয়ে পড়ায় এই সমস্যা। অথচ একটা সময় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছে অমিল ছিল এই খুচরো। বাটা দিয়ে খুচরো কয়েন নিতে হত ব্যবসায়ীদেরও। কিন্তু নোটবাতিলের পর বালুরঘাট-সহ জেলার ব্যাংকগুলিতে প্রচুর পরিমাণে খুচরো কয়েন পাঠানো হয় রিজার্ভ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। ব্যাংকও তা গ্রাহকদের দেয়। ফলে ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের কাছে জমে গিয়েছে এই কয়েন।
এখন একদিকে ব্যবসায়ী, অপরদিকে ব্যাংকও অনীহা প্রকাশ করছে খুচরোগুলি নিতে।
বালুরঘাট বুড়া কালি পুজোকমিটির সম্পাদক বিকাশ ভৌমিক জানান, ভক্ত ও দর্শনার্থীরা খুচরো কয়েন প্রণামি হিসেবে দান করেন। যার বেশিরভাগই ১, ২, ৫ টাকার। সারা বছরের জমা কয়েন তো আছেই। গতবারেরও প্রণামির অর্থের মধ্যে রয়ে গেছে পঞ্চাশ হাজারের খুচরো কয়েন। সেই বিশাল পরিমাণ খুচরো এখন আর নিতে চাইছে না কেউ। ব্যাংকও এত খুচরো একসঙ্গে নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। এবছর তাই পুজোর খরচ বাবদ এই খুচরো দেওয়াই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বুড়া কালী পুজো কমিটির সদস্যদের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.