বলরামপুর থেকে উদ্ধার 'বৈধ' ব্যালট। ছবি: সুনিতা সিং।
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সাঁতুড়ি, নিতুড়িয়া, ঝালদার পর বলরামপুর। সোমবার দুপুরে পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজের গণনা কেন্দ্রের বাইরে থেকে বিজেপিকে ভোট দেওয়া ‘বৈধ’ ব্যালট উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ব্যালট উদ্ধারের ছবি বিজেপির ওবিসি মোর্চার জেলা সভাপতি তথা বলরামপুরের বাসিন্দা বিরিঞ্চি কুমার ফেসবুক লাইভ করেন। তারপরই হৈ চৈ বেঁধে যায় জেলা রাজনৈতিক মহলে।
কিন্তু এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে। কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির পরেও শুকনো ব্যালট কীভাবে পাওয়া গেল? এদিকে সম্প্রতি সাঁতুড়ির গণনা কেন্দ্র থেকে যে ব্যালট উদ্ধার হয়েছে সেই ঘটনায় একটি ভিডিও (সংবাদ প্রতিদিন এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি) ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে, “তৃণমূলের ছাপ দেওয়া ব্যালটগুলো হঠিয়ে দে।” জঙ্গলমহলের এই জেলায় গণনায় কারচুপি হয়েছে, এই বিষয়ে এদিন কলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশন করেন পুরুলিয়ার সাংসদ, বিজেপির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
অন্যদিকে ঝালদা ১ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ১৪ নম্বর আসনের কংগ্রেস প্রার্থী বিপ্রদাস মাহাতো তাঁর কেন্দ্রে গণনায় কারচুপি হয়েছে বলেও রিট পিটিশন করেন। জেলা পরিষদের ২১ নম্বর আসনের কংগ্রেস প্রার্থী পঞ্চানন মাহাতোও একইভাবে কারচুপির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার হাই কোর্টে মামলা করবেন। তাঁর কেন্দ্রে ব্যালট উদ্ধার হয়েছিল গত শনিবার ঝালদা থেকে। তবে ওই ব্যালটগুলো ছিল তৃণমূলকে ভোট দেওয়া।
এদিন বলরামপুর কলেজের গণনা কেন্দ্রের বাইরে থেকে যে ব্যালটগুলি উদ্ধার হয়, তার সঙ্গে বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধার রয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই ব্যালট নিয়ে ফেসবুক লাইভে বিজেপি নেতা বলেন, “কীভাবে এই ব্যালট এল তা প্রশাসনের কাছে জানতে চাই।” বলরামপুর ব্লকের বিডিও শুভাশিস ঘোষ জানান, “বিষয়টি কানে এসেছে। দেখা হচ্ছে।” বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা বলেন, “সমগ্র জেলাজুড়ে ব্যালট উদ্ধার হচ্ছে। ফলে বারবার প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে গণনায় কারচুপি হয়েছে। এই জয় হয়েছে প্রশাসনের, তৃণমূলের নয়। তাই প্রশাসনের বিজয় মিছিল করা উচিত। সমগ্র জেলাজুড়ে গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে আমরা হাই কোর্টে রিট পিটিশন করেছি। এই ঘটনায় তদন্তের কথা বলেছি।”
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “বিরোধীরা হেরে ব্যালট রাজনীতি শুরু করেছেন। মানুষের রায় তারা মেনে নিতে পারছেন না। ফলে বিরোধীরা আরও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.