সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: কিশোরী হত্যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা বাগনান৷ কিন্তু, ঘটনার পর চার দিন কেটে গেলেও এখনও অধরা ছাত্রী ঈশিতা দত্ত খুনের মূল অভিযুক্তরা৷ অবিলম্বে, দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বাগনানের সর্বত্র ‘জাস্টিস ফর ঈশিতা’ পোস্টার পড়েছে গোটা শহরে৷ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বাগনানে প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করা হচ্ছে, ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে থানায়৷ ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই সংগঠনের পক্ষ থেকে সোমবার বাগনান বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, বাগনানবাসী ঈশিতা খুনের সুবিচার দাবি করে ঝড় তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়াতেও। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পুলিশকে চরকির মত পাক খাইয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ঈশিতা খুনের মূল দুই অভিযুক্ত শুভময় মণ্ডল ও তার মা সুস্মিতা মণ্ডল৷ গত বুধবার সন্ধ্যায় বাগনান থানার নবাসন গ্রামে ঈশিতার পরিচিত কিশোর অভিযুত শুভময়দের ভাড়া বাড়িতে খুন হয় বাগনান এনডি ব্লকের নবম শ্রেণির ছাত্রী ঈশিতা দত্ত৷ বৃহস্পতিবার সকালে অভিযুক্তদের ঘর থেকে ঈশিতার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ মৃতদেহে একাধিক আঘাত সহ মাথার পিছন দিকেও গভীর ক্ষত লক্ষ্য করা গিয়েছে৷
বুধবার বিকেলে টিউশন পড়তে যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল ঈশিতা। ঈশিতার খোঁজ করতে করতে তার মা মিঠু দত্ত বুধবার রাতেই অভিযুক্তদের ভাড়া বাড়িতে গিয়ে পৌঁছন। তখন অভিযুক্তদের ঘরের বাইরে তালা ঝুলতে দেখে তাঁরা ফিরে আসেন। সেদিন থেকেই অভিযুক্ত ও তার মা সুস্মিতার কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সমস্ত বিষয়টি জানিয়ে বুধবার রাতেই বাগনান থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযুক্তের বাড়ির মালিক সোমা সাঁতরা বৃহস্পতিবার সকালে বন্ধ ঘরের মধ্যে কাউকে পড়ে থাকতে দেখে মিঠুদেবীদের খবর দেন।
মিঠুদেবীরা পুলিশ নিয়ে গিয়ে বন্ধ ঘরের তালা ভেঙে সুস্মিতার নিথর দেহ উদ্ধার করেন। তারপর থেকে পুলিশ হন্যে হয়ে এই ঘটনার দুই অভিযুক্তকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। কিন্তু চার দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও অভিযুক্তদের টিকির পায়নি হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ। জানা যায়নি খুনের মোটিভ। সময় যত গড়াচ্ছে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ততই বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। সুবিচারের আশায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান মৃতার পরিবার। ঈশিতা খুনের অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে বাগনান থানায় এসইউসিআই ও একটি অরাজনৈতিক মঞ্চের পক্ষ থেকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। এসইউসিআই-সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দোষীদের ধরার দাবিতে মিছিল করা হয়। একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সোমবার বাগনান বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সুবিচারের আশ্বাস দিয়েছেন৷ পরিস্থিতির উপর তিনিও নজর রেখেছেন। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও অভিযুক্তরা কোথায় রয়েছে তার কোনও হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। তাদের দু’টি মোবাইল নম্বরই বন্ধ থাকায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তবে, খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের ধরা সম্ভব হবে বলে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা আশা প্রকাশ করেছেন৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.