শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি : দম্পতির রহস্যমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল বাগডোগরার দারোগাও এলাকার সুকান্তনগরে৷ রবিবার সাতসকালে বাড়িতে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অজয় কুশওয়াহা ও মীনা কুশওয়াহার দেহ৷ তবে একই বিছানায় অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে দম্পতির চার বছরের ছেলে ও আড়াই মাসের মেয়ে৷ খুনের কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা৷
বছর কয়েক আগে বাগডোগরায় এসে বসবাস শুরু করেন কুশওয়াহা দম্পতি৷ চারতলা বাড়িতেই চার বছরের ছেলে ও আড়াই মাসের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তাঁরা৷ ক্যাটারিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অজয় কুশওয়াহা ও মীনা কুশওয়াহা৷ প্রতিবেশীদের দাবি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনও ঝগড়াঝাটি ছিল না৷ অজয় ও মীনা দুজনেই বেশ মিশুকে ছিলেন৷ এলাকার প্রত্যেকের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল তাঁদের৷
ক্যাটারিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় অনেক রাত পর্যন্তই বাড়িতে লোকজনের আনাগোনা লেগেই থাকত৷ ক্যাটারিং ব্যবসার ম্যানেজার উদয় প্রধানের দাবি, শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত অজয় কুশওয়াহার সঙ্গে ফোনে কথাও হয়েছিল তাঁর৷ ক্যাটারিংয়ের কাজ শেষে রাত ২টোর সময় অজয়ের বাড়ির সামনে আসেন তিনি৷ দেখেন বাড়ির দরজা খোলা রয়েছে৷ বহুবার ডাকাডাকিতে সাড়া মেলেনি কারও৷ বাড়ির ভেতর ঢুকে অবাক হয়ে যান তিনি৷ দেখেন ডাইনিং হলে একটি বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন অজয় কুশওয়াহা৷ পাশের ঘরে বিছানায় অজয়ের স্ত্রী মীনাও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন৷ ওই বিছানাতেই মীনার পাশে ছিল তাঁর দুই সন্তান৷ কিন্তু দুজনকেই অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়৷ দুটি ঘরেরই আলমারির দরজা খোলা ছিল৷ লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে ছিল ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্রও৷ ঘরের ভেতরে থাকা আলমারি থেকে উধাও নগদ তিন লক্ষ টাকা ও সোনার গয়না৷
তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় শিলিগুড়ি থানায়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দম্পতির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে৷ স্নিফার ডগ দিয়ে গোটা বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়৷ পুলিশের অনুমান, প্রথমে কোনও ওষুধ খাইয়ে অচৈতন্য করা হয়েছে দুজনকে৷ এরপর শ্বাসরোধ করা হয়েছে৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী কিছু দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে অজয় ও মীনার৷ কী কারণে খুন করা হয়েছে কুশওয়াহা দম্পতিকে, তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ দুই সন্তান অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ায়, পুলিশ মনে করছে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই খুন করা হয়েছে দম্পতিকে৷ পুলিশ নিহতদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছে৷ আটক করা হয়েছে বেশ কয়েকজনকে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.