গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: রাজনীতির ময়দানে নিজের দর বাড়াতে চেয়েছিল বাবু মাস্টার ওরফে ফিরোজ কামাল গাজী। আর তাই বিধানসভা ভোটের আগে নিজেই নিজের উপর হামলা করিয়েছিল সে। তার গ্রেপ্তারির পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে পুলিশের হাতে।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয় এলাকার দাপুটে নেতা বাবু মাস্টার। এলাকাবাসীর কথায়, এক কালে তার ভয়ে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত।মিনাখাঁর বাসন্তী হাইওয়েতে রাতের অন্ধকারে সেই বাবু মাস্টারের উপর দুষ্কৃতী হামলা হয়।গাড়ি লক্ষ্য করে বোমাও ছোঁড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই হামলা নিয়ে অবশ্য সেই সময়ই প্রশ্ন উঠেছিল। নিজেই নিজের ওপর হামলা করায়নি তো বাবুমাস্টার?
পুরভোটের আগে শুক্রবার আচমকাই বাবু মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। জানা গিয়েছে, আগামী ২২ জানুয়ারি চার পুরনিগমে ভোট। তার মধ্যে রয়েছে বিধাননগরও। ভোটের আগে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নাকা তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় রাস্তার ধারে একটি গাড়িকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় তাদের। তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে আসে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ কার্তুজ। গাড়িতে তখন ছিল বসিরহাটের দাপুটে নেতা বাবু মাস্টার-সহ আরও দু’জন -জয়ন্ত গায়েন ও আমজাদ গাজী। শনিবার ধৃতদের বিধাননগর আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশের বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বাবুমাস্টারের উপর হামলার ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। যার মাস্টারমাইন্ড বাবুমাস্টার নিজেই। রাজনীতির পালে হাওয়া লাগাতে ওই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছিল সে। পরবর্তীকালে ধৃত অভিযুক্তরাও পুলিশি জেরায় সে কথা স্বীকার করে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশি তদন্তেও উঠে আসে একই তথ্য। তাহলে কি সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতেই কি এই গ্রেপ্তারি, উঠছে প্রশ্ন।
কে এই বাবু মাস্টার ?
উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জের দাপুটে নেতা এই ফিরোজ কামাল গাজী ওরফে বাবু মাস্টার। রাজনৈতিক জীবনের প্রথমে সিপিআই করলেও পরে সিপিএমে যোগ দেয়। একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত। সে সময় বিরোধী রাজনৈতিক স্বর একেবারে স্তব্ধ করে দিয়েছিল নিজের এলাকায়। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদলের পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে যোগ দেয় তৃণমূলে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে সে বিজেপিতে যোগ দেয়। পরে অবশ্যও বিজেপিও ছাড়ে সে। এহেন বাবু মাস্টারের গ্রেপ্তারি ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.