Advertisement
Advertisement

Breaking News

Maheshtala

মহেশতলায় অটো জালিয়াতি চক্রের পর্দাফাঁস, পুলিশের জালে দালাল, ফিন্যান্স সংস্থার এজেন্ট

প্রতারণা চক্র কীভাবে চলত?

Auto fraud case found in Maheshtala 4 arrested by police
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:March 19, 2025 3:02 pm
  • Updated:March 19, 2025 3:02 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মহেশতলায় বড়সড় অটো জালিয়াতি চক্রের পর্দাফাঁস পুলিশের। জালিয়াতি কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের আলিপুর আদালতে পাঠালে আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই প্রতারণা চক্র কীভাবে চলত? জাল কতদূর বিস্তৃত খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

কীভাবে চলত প্রতারণা? বাজারে দালাল মারফত নগদ টাকায় অনেকেই অটো কিনে রাস্তায় চালাচ্ছেন। কিন্তু কয়েকমাস চালানোর পরই অটো তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে কোনও ফিন্যান্স কোম্পানি। শুধুমাত্র মহেশতলাতেই এভাবে প্রতারিত হয়েছেন বহু মানুষ। ১৪ মার্চ পাঁচ ব্যক্তির আলাদা আলাদা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে মহেশতলা থানার পুলিশ। তদন্তে উঠে আসা তথ্যে রীতিমতো চক্ষু চড়ক গাছ পুলিশের!

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা প্রতারিত হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে দালালের সাহায্যে অটো রাস্তায় নামিয়েছেন। কেউ নতুন অটোর রুট পারমিট, কেউ নাম হস্তান্তর, কেউ আবার নতুন অটো বার করবার জন্য দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। প্রতারকদের কথা মতো দিয়েছেন নিজেদের পরিচয়পত্রের জেরক্সও। আর তাতেই বাজিমাত!

জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত নথির ভিত্তিতেই দালাল চক্র বিভিন্ন ফিন্যান্স কোম্পানির এজেন্টদের সাহায্যে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নিত। যার প্রথম ভাগের কিস্তিগুলি ওই দালালরা দিলেও, পরবর্তী সময় যখন সেই কিস্তি আর জমা দেওয়া হত না। তখনই ফিন্যান্স কোম্পানি বাউন্সার পাঠিয়ে রাস্তা থেকেই অটোগুলিকে তুলে নিয়ে যেত।

অটোর মালিকেরা ফিন্যান্স কোম্পানির সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করলে ফিন্যান্স কোম্পানিগুলি ভারত সরকারের এম পরিবহন অ্যাপটি খুলে, তাদের নামে যে লোন নেওয়া হয়েছে তা দেখায়। কিস্তির টাকা শোধ না হলে অটোও ছাড়বে না সংস্থা! তাই কোনও বিকল্প থাকছে না প্রতারিত ব্যক্তিদের কাছে।

আর এতেই উঠেছে প্রশ্ন। কারণ, যার নামে অটো তার সম্মতি ছাড়াই, সেই অটোর মালিকানা অন্য ব্যক্তির নামে কী করে হয়ে যাচ্ছে? কাগজে-কলমে যখন ওই গাড়ির মালিকানা অপরজন, তাহলে কেন প্রথম ব্যক্তিকেই লোনের টাকা পরিশোধ করতে হবে? কোন তথ্য, নথি যাচাই না করেই কী করেই বা আরটিও এম পরিবহন অ্যাপে এই লোনের অনুমতি দিয়ে দিচ্ছে?

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মহেশতলার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাঁতরা এবং সোমনাথ চক্রবর্তী নামে দুই ব্যক্তি, এই চক্রের দালাল। এদের মাধ্যমেই সাধারণ মানুষের নথি পৌঁছত অটো জালিয়াতি চক্রের হাতে। এই দু’জন দালালকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাতে উঠে আসে দু’ই ব্যক্তির নাম। একজন হরিদেবপুরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস, যিনি একটি ফিন্যান্স কোম্পানিতে এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। এবং অপরজন হল সমীর নস্কর, বাড়ি ঠাকুরপুকুরে। যার কাজ ছিল সই নকল করে নথি এবং ডিড বানিয়ে মটর ভেহিকেলস বা আরটিওতে জমা করা।

তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন এই জালিয়াতির চক্র শুধুমাত্র মহেশতলাতেই সীমাবদ্ধ নেই। জাল বিস্তৃত বহুদূর পর্যন্ত। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতারণা চক্রের শিকড়ে পৌঁছতে চাইছেন তদন্তকারীরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement