সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: দীর্ঘদিন চুপচাপ থাকার পর থমকে থাকা সেতুর কাজ শুরু করতে টনক নড়ল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর খবরের জেরে মঙ্গলবার পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের আওতায় থাকা পর্ষদের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার শংকর নস্কর-সহ আধিকারিকরা থমকে থাকা সেতুর কাজ দেখতে যান। তাঁরা পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের কাঁটাগোড়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেন। আধিকারিকদের সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো।
তবে এই বিষয়ে ওই আধিকারিকরা কোন কথা বলতে চাননি। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “ওই সেতুর বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ওখানে কাজ শুরু হবে।” পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই নতুন করে ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি হবে।
শিলান্যাসের পর পার হয়ে গিয়েছে সাত-সাতটা বছর। কিন্তু পুরুলিয়া এক নম্বর ও আড়শা ব্লকের সংযোগকারী কাঁসাই নদীর উপর আজও সেতু গড়ে ওঠেনি। সেতু নির্মাণে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগ হাতে প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করলেও তা মাঝপথে থমকে যায়। তাই ফি বছর বর্ষার সময় নদী পারাপারে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী সেতু তৈরি করা যেন পুরুলিয়ার এই অঞ্চলের মানুষ জনের নিয়তি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সোমবার এক রাতের প্রবল বর্ষণে ওই অস্থায়ী সেতু ভেঙে যায়। ফলে ওই এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষজন ব্যাপক সমস্যায় পড়লেন।
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের ন’কোটির বেশি টাকায় ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন ওই বিভাগের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। ওই শিলান্যাসে দিন বদলের স্বপ্ন দেখেছিলেন জেলার বলরামপুর ও জয়পুর বিধানসভার মানুষজন। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবের মুখ দেখল না। বলরামপুর বিধানসভার মধ্যেই রয়েছে পুরুলিয়া এক ব্লক। জয়পুর বিধানসভায় আড়শা।
এই সেতু নির্মাণে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে থেকে এলাকার মানুষজন লড়াই করে যাচ্ছেন। একের পর এক আবেদনপত্র জমা করেছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিতে। কিন্তু কোন কাজই হচ্ছে না। এই সেতু নির্মাণে যেভাবে ডিপিআর (ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করা হয়েছিল সেই মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে। তাই প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থা পিছিয়ে গিয়েছে বলে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.