প্রতীকী ছবি
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: খোদ কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যা এক নাবালিকার জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে! খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন প্রশাসন ও চাইল্ড লাইনের কর্তারা। কিন্তু ওই নাবালিকার সাহায্যেই তাঁদের কার্যত ঘোল খাইয়ে ছাড়লেন বাড়ির লোকেরা। শেষরক্ষা অবশ্য হয়নি। বাবা-মা মুচলেকা দিয়েছেন যে, আঠেরো বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের জীবনতলায়।
[আরও পড়ুন:তারকেশ্বর লোকালে গোখরো সাপ, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন যাত্রীরা]
ওই কিশোরীর বাড়ির জীবনতলা থানার পয়না গ্রামে। এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে। রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্য বছর পনেরোর ওই কিশোরী। জানা গিয়েছে, কিশোর বয়সেই মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছিলেন পরিবারের লোকেরা। বিয়েতে মত ছিল না ওই কিশোরীর, জোর করে তার বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যাদের ঘটনাটি জানায় ওই কিশোরী। খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ব্লক প্রশাসন ও চাইল্ড লাইনের কর্তারা যখন বাড়িতে পৌঁছান, তখন ওই নাবালিকার দিদিকে দেখিয়ে বাড়ির লোকেরা দাবি করেন যে, তাঁরই বিয়ে হচ্ছে। এমনকী, পাত্রীর প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রমাণপত্রও দেখানো হয়। ঘটনায় রীতিমতো বিভ্রান্ত হন প্রশাসনিক কর্তারা। বাধ্য হয়েই বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা। ভুল ভাঙতে অবশ্য সময় লাগেনি।
জানা গিয়েছে, বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পর ফের প্রশাসনিক কর্তাদের ফোন করে কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যারা। তারা জানায়, আসল পাত্রীকে লুকিয়ে রেখেছেন পরিবারের লোকেরা। প্রশাসনিক কর্তারা চলে গেলেই ওই নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হবে। ফের বিয়ে বাড়িতে যান বিডিও-সহ চাইল্ড লাইনের কর্তারা। এবার সরাসরি পাত্রীর মায়ের কাছে বিডিও জানতে চান, ‘আপনার ছোট মেয়ে কোথায়?’ তাতেও ঘাবড়ে যাননি ওই মহিলা। উলটে এক আত্মীয়ের কিশোরী মেয়েকে দেখিয়ে দেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্দেহ হওয়ায় যখন জেরা করতে তাঁদের জেরা করতে শুরু করেন প্রশাসনিক কর্তারা, তখন ভয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ওই নাবালিকার মা। শেষপর্যন্ত ওই নাবালিকাকে বের করেন আনেন পরিবারের লোকেরাই। থানায় গিয়ে পাত্রীর বাবা মুচলেকা দিয়েছেন যে, আঠেরো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না।
কিন্তু, যে নাবালিকা কন্যাশ্রী ক্লাবের খবর দিয়েছিল, সে নিজে কেন প্রথমে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সামনে হাজির হল না? ওই নাবালিকা জানিয়েছে, বাড়িতে পুলিশ দেখে ভয় গিয়েছিল। বাবা-মা ধরে নিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় লুকিয়ে ছিল সে।
[আরও পড়ুন: আদালতের নির্দেশ অমান্য করে গাছের গায়ে প্রচার, ধরা পড়লে হতে পারে জেল!]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.