সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ট্রেনের এসি কামরায় ব্যাগে ভরে পাচার করা হচ্ছিল ধবধবে সাদা রঙের দু’টি বিরল প্রজাতির হিমালয়ান সজারু (Himalayan porcupine)। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। রেলের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ (সিআইবি) ও আরপিএফ যৌথ অভিযানে রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান স্টেশনে ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সজারু দু’টি।
পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে। পরে সজারু দু’টি বর্ধমানের বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার ধৃত তিন পাচারকারীকে বর্ধমান আদালতে পেশ করার কথা। প্রাথমিকভাবে ধৃতরা তদন্তকারীদের জানিয়েছে, ত্রিপুরার ধর্মনগর থূকে সজারু দু’টি নিয়ে আসছিল তারা। শিয়ালদহে একজনের হাতে প্রায় এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে তারা তা তুলে দেওয়ার কথা ছিল।
জানা গিয়েছে, ধৃতদের একজন ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা নাম গণেশ সাউ, বাকি দু’জন পূর্ব দিল্লির শাকুরপুরের পিন্টু কুমার ও উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট-গোপালপুরের দেশবন্ধুনগরের তরুণকুমার ঘোষ। তরুণ রেলের ঠিকাকর্মী বলে জেরায় জানিয়েছে। এই তিনজন ত্রিপুরা থেকে সজারু তিনটি আনছিল। এসি কামরায় চটের বস্তায় ভরে তরুণের হেফাজতে রেখে আনা হচ্ছিল সজারু দু’টি। এই ব্যাপারে সিআইবি-র কাছে খবর আসে। এদিন সন্ধ্যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস বর্ধমান স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই তল্লাশি চালানো হয়। উদ্ধার করা হয় সে বিরল সজারু দু’টিকে। তিনজনকেই আটক করে আরপিএফ পোস্টে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর দেওয়া বনদপ্তরে। বনকর্মীরা এসে সজারু দু’টিকে রমনাবাগান অভয়ারণ্যে নিয়ে গিয়েছেন।
বন দপ্তরের রেঞ্জ অফিসার কাজল বিশ্বাস জানান, সজারু দু’টি অসুস্থ রয়েছে। আপাতত রমনাবাগানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরবর্তীতে সজারু দু’টিকে কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, দু’দিন আগে বন দপ্তর গলসি-১ ব্লকে অভিযান চালিয়ে দুই পরিযায়ী পাখি শিকারিকে গ্রেপ্তার করেছিল। রেল পথে আগে বিরল প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে বহুবার। কচ্ছপ পাচারকারীরাও ধরা পড়েছে। কিন্তু সজারু পাচারের ঘটনা এই প্রথমবার সামনে এসেছে। এই চক্রের জাল দেশজুড়ে বিস্তৃত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে পাচার করে সজারু নিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়ে কী করা হত তা নিয়ে চিন্তিত পরিবেশপ্রেমীরা। ধৃতদের জেরা সেই তথ্য জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.