ছবি: প্রতীকী।
চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: জোড়া ‘পেতনি’ ভর করেছে যুবকের উপর। ‘ভূত’ তাড়াতে, থুড়ি, ‘পেতনি’ তাড়াতে তাই গুণিনের নির্দেশে জুতো মুখে করে বটগাছের তলায় ঘোরানো হল যুবককে! এমনই অবৈজ্ঞানিক কাণ্ডকারখানার সাক্ষী মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) বড়ঞার চৌতপুর বেলতলা এলাকায়। আজকের প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক যুগে এমন এক ঘটনার কথা শুনে চোখ কপালে উঠছে অনেকেরই। তীব্র নিন্দায় সরব স্থানীয় বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।
ঘটনা ঠিক কী? মুর্শিদাবাদ বড়ঞা থানার অন্তর্গত ময়ুরাক্ষী নদীবাঁধের মাঝে অবস্থিত চৌতপুর বেলতলা শ্মশান। সেখানে এক গুণিনের ডেরা। সোমবার বাবার দরবারে নিয়ে আসা হয় বছর পঁয়ত্রিশের রাজু দাসকে। কান্দি শহরের ভোলানাথপুর পাড়ার বাসিন্দা রাজুর উপর নাকি ‘আত্মা‘ ভর করেছে! তাও আবার এক নয়, দু-দুটি। ‘পেতনি’ রানি শেখ ও সুস্মিতা রায় নামের দুই মৃত মহিলা তাঁর শরীরে প্রবেশ করেছে। তারপর থেকে পরিবারের সদস্যরা রাজুর তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন বলে দাবি। তাই পরিবারের পক্ষ থেকে রাজুকে নিয়ে আসা হয়েছে ভূত ছাড়াতে।
বাঁধের উপর বসবাস করা সেই সাধুর মন্ত্রের জোর নাকি এতটাই যে যে কোনও অশরীরী আত্মা তার সামনে আর অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারে না। সোমবার সকালে দেখা গেল তেমনই এক কাণ্ড। রাজু দাসের উপর ভর করা জোড়া অশরীরী আত্মাকে টেনে বের করতে তিনি রাজুকে জুতো মুখে নিয়ে বটগাছের তলায় ঘোরালেন সাধুবাবা! পরিবারের দাবি, তারপর থেকে নাকি স্বাভাবিক আচরণ করছেন রাজু। আজকের যুগেও যে গ্রামবাংলার কোথাও কোথাও এতটা কুসংস্কারের অন্ধকার রয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
এই ঘটনা শুনে তাজ্জব অনেকেই। আর যুক্তিবাদীরা চিন্তিত। মুর্শিদাবাদের বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্য তথা কান্দি রাজ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উমানন্দ সিংহর প্রতিক্রিয়া, ”এটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। মোবাইলের যুগে এমন পিছিয়ে পড়া মনোভাব, ওঝা-গুনিন কারবার এভাবে চলছে, খুবই লজ্জাজনক। আমার মনে হয়, ওই যুবকের মানসিক কোনও রোগ হয়েছে। ভাল ডাক্তার দেখানো উচিত। প্রশাসন এ ব্যাপারে সাহায্য করুক। কুসংস্কার দূর করতে গ্রামগঞ্জে প্রচার প্রয়োজন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.