সম্যক খান, মেদিনীপুর: ফের হাতির হানার মৃ্ত্যু হল এক ব্যক্তির। তাণ্ডবে বাধা দেওয়ায় শুঁড়ে পেঁচিয়ে তাঁকে আছাড় মারে উন্মত্ত গজরাজ। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী। মৃতের নাম কালিপদ মাহাতো(৫৫)। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, দলমা থেকে আসা চার-পাঁচটি হাতি শুক্রবার রাতে শালবনীর ঢেঙাশোলের ঝড়ভাঙা এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছিল। ভাঙছিল মাটির বাড়ি। গজরাজের তাণ্ডবে মাঠের ফসলেরও দফারফা। চোখের সামনে গ্রামবাসীকে পথে বসতে দেখে সহ্য করতে পারছিলেন না কালিপদ মাহাতো। তাই হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে উন্মত্ত হাতিগুলিকে বাধা দিতে যান তিনি। ঠিক তখনই বিপত্তি ঘটে। একটি হাতি তাকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে। ঘটনাস্থলেই মৃ্ত্যু হয় তাঁর।
নতুন বছরে এই নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে হাতির হানায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। একের পর এই ধরণের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে, নতুন বছরের গোড়াতেই দলমা থেকে প্রায় ১০০টি হাতি শালবনির বিভিন্ন জঙ্গলে ঢুকেছে। তারাই মাঝেমধ্যে একাধিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের উপরও চড়াও হচ্ছে। দিন কয়েক আগে পড়শি জেলা ঝাড়গ্রামেও একই ধরণের একটি ঘটনা ঘটে।রাতে শ্মশান থেকে ফেরার সময় এক ব্যক্তি গজরাজের সামনে পড়ায় তাঁকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে হাতিটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল মানেই যখনতখন বন্যপ্রাণীর হামলার আতঙ্ক। জঙ্গলের ঘেরাটোপ পেরিয়ে বাঘ, হাতির লোকালয়ে আগমন নতুন কিছু নয় এখানকার বাসিন্দাদের কাছে। হাতির উৎপাতে জমি ফসল কিংবা ঘরবাড়ি তছনছ করার সঙ্গেও তাঁরা অনেকটাই অভ্যস্ত। তবে উন্মত্ত হাতির এলোপাথাড়ি ছুটোছুটি কিংবা শুঁড়ে তুলে আছাড় মারার ঘটনা এখনও ত্রাসের জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের কাছে। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরের এসব বনাঞ্চলে গজরাজের দাপট বেড়েছে। প্রায়শই জাতীয় সড়কে উঠে এসেছে হাতি। আটকে গিয়েছে যানচলাচল। বনাঞ্চলের সীমানা পেরিয়ে হাতি শহরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে, এমন ঘটনাও ঘটছে ইদানিং। কিন্তু হাতির হানায় প্রাণ হারানোর ঘটনা যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কার্যত আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.