সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: ব্রিগেডের (Brigade) মঞ্চে একাধিক বাম নেতার পাশাপাশি দেখা গিয়েছে আব্বাস সিদ্দিকি ও অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। কিন্তু সেখানে দেখা যায়নি শিলিগুড়ির বাম বিধায়ক তথা বর্ষীয়ান নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে (Ashok Bhattacharya)। যা নিয়ে তুমুল ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়িতে। বাম কর্মীর একাংশ থেকে শুরু করে শিলিগুড়ির তৃণমূল-বিজেপির কর্মীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বিরোধী শিবিরের তাঁর প্রতি ভালবাসায় আপ্লুত অশোকবাবু।
ব্রিগেডের মঞ্চে অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে অশোকবাবু জানিয়েছেন, দলের প্রতি তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। বামেরা একটা নীতি অনুযায়ী চলে আর সেই নীতি অনুযায়ী সবদলের প্রতিনিধিদের এবং বামেদের শরিক দলের প্রতিনিধিদের মঞ্চে জায়গা করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দাবি, পলিটব্যুরো সদস্য বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র এবং মহম্মদ সেলিমকে সামনে রেখে, ব্রিগেডে মঞ্চ পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে তিনি যাই বলুন না কেন, তার শুভানুধ্যায়ীরা অবশ্য তা মানতে নারাজ। বিরোধীদের তাঁর প্রতি ভালবাসা দেখে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন অশোকবাবু। শুভানুধ্যায়ীদের তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অশোকবাবু বলেন, “মানুষ যে আমাকে নিয়ে ভাবছে এবং আমাকে ভালবাসে তাঁর জন্য আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁদের সবার আশীর্বাদ চাই বিধানসভা নির্বাচনের জন্য।” পাঁচবারের বিধায়ক অশোকবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দলীয় নির্দেশেই কাজ করেন। শিলিগুড়ি বিধানসভা এবং লাগোয়া এলাকার যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সেখানে দলকে জেতাতে ঝাঁপিয়ে পড়বেন দীর্ঘদিনের নেতা।
কিন্তু ঠিক কী বলছেন শুভানুধ্যায়ীরা? উত্তরবঙ্গের এক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা তৃণমূল কর্মী তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় অশোকবাবুর প্রতি রাজ্য নেতৃত্বের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তাঁর দাবি, যোগ্য সম্মান দেওয়া হয়নি শিলিগুড়ির বিধায়ককে। দার্জিলিং জেলার যুব তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতার ঘনিষ্ঠ একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় অশোকবাবুর প্রতি বঞ্চনার কথা তুলে ধরে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। বিজেপির পদাধিকারীরা মন্তব্য করছেন, অশোকবাবুকে পিছনের সারিতে রাখায় বামেদের দৈন্যতা প্রকাশ পাচ্ছে। যদিও পরে পোস্টটি মুছে ফেলেন তিনি। এছাড়াও বহু মানুষ এ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন।
২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে বামেরা। সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো নেতাকে হার স্বীকার করতে হয়েছে। সেখানে শিলিগুড়িতে বামশিবিরকে টিকিয়ে রেখেছেন অশোক ভট্টাচার্য। শুধু শিলিগুড়িতে বিধানসভায় নয়, শিলিগুড়ি পুর নিগমের এবং শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে মূলত তাঁর কাঁধে ভর দিয়েই বৈতরণী পার করেছে বামেরা। লাল দুর্গ বলে আখ্যা পেয়েছে শিলিগুড়ি। ফলে তার জনপ্রিয়তা যে রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.