কৃষ্ণকুমার দাস ও শুভদীপ রায়নন্দী: ফিরহাদ হাকিমের পথেই যাত্রা শুরু করছেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। পুরনিগমের মেয়াদ হয়ে যাওয়ায় নিযুক্ত প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হতে চলেছেন এই বাম বিধায়ক। কলকাতা পুরসভার মতো শিলিগুড়িতেও প্রশাসক বোর্ড তৈরি হচ্ছে অশোক ভট্টাচার্যকে মাথায় রেখে। এ নিয়ে পুরদপ্তরের পাঠানো প্রস্তাবে মুখ্যমন্ত্রী সিলমোহর দিতেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৬ তারিখ এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলে খবর।
রাজ্যের পুরসভাগুলির মেয়াদ শেষ হলেও, করোনা আবহে কোথাও কোনও ভোট করার পরিস্থিতি নেই। তাই কাজ চালু রাখতে বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগের পথেই হেঁটেছে রাজ্য সরকার। কলকাতা পুরসভায় সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে শীর্ষে রেখে তৈরি হয়েছে প্রশাসকমণ্ডলী। তাতে অন্যান্য সদস্য হিসেবে রয়েছেন মেয়র পারিষদরা। এবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের পালা। সেখানে বাম পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর প্রশাসক বোর্ড তৈরি করতে বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের উপরই আস্থায় রাখল পুরদপ্তর। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ” করোনার জেরে দেশে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি চলছে। মানুষ এখন নিজের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। এখন রাজনীতি করার সময় নয়, যাঁরা করছেন, ভুল করছেন। মানবিক মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলের বিধায়ক ও বামফ্রন্ট পুরবোর্ডের মেয়রকেই চেয়ারম্যান করে প্রশাসক বোর্ড গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অশোকবাবু ও তাঁর পারিষদরা সমস্ত দলের প্রাক্তন কাউন্সিলরকে নিয়ে করোনার ভয়ানক পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ির মানুষকে ভাল পরিষেবা দিতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাই ‘আমরা-ওরা’ না বামফ্রন্টের মেয়রকেই মুখ্য প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার।”
পাঁচ বছর আগে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভা দখল করে ক্ষয়িষ্ণু বামপন্থী শিবিরকে চাঙ্গা করে তুলেছিলেন সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। পরবর্তী বিধানসভা ভোটেও একই রকম সাফল্য। তৃণমূলের দাপটের মাঝেও অশোক ভট্টাচার্যর এহেন সাফল্য ‘শিলিগুড়ি মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। রাজনৈতিক বিরোধ থাকলেও, বর্তমানে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া যথেষ্ট ভাল। সেই সমীকরণেই ফিরহাদ শিলিগুড়ির প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন। ফিরহাদের পছন্দে সায় দিতে দ্বিধা করেননি মুখ্যমন্ত্রীও। নতুন দায়িত্ব সঁপে দিয়েছেন তাঁর হাতে।
তবে কিছুটা নতুন দায়িত্ব নিয়ে সেভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি অশোক ভট্টাচার্য। তিনি শুধু জানিয়েছেন, পুর আইন অনুযায়ী, বোর্ডের মেয়াদ শেষের পর ভোট না হলে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করা হয়। সাধারণত বিদায়ী মেয়রই তাঁর প্রধান হন। তাই রাজ্য সরকার পুর আইন মেনেই কাজ করেছে। তবে তাঁর কাছে এখনও কোনও সরকারি নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি। সম্ভবত ১৬ তারিখই তিনি নতুন দায়িত্বের বিজ্ঞপ্তি হাতে পাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.