Advertisement
Advertisement
করোনা রোগী

যমে-মানুষে লড়াইয়ে জয়, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন করোনা আক্রান্ত ২ প্রৌঢ়া

অযথা ভয় পাবেন না, বার্তা দুই করোনা রোগীর।

Asansol's two corona patient cured, they back to home

ছবি: প্রতীকী।

Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 26, 2020 1:20 pm
  • Updated:April 26, 2020 1:20 pm  

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা যুদ্ধে জয়ের হাসি হাসলেন দুই প্রৌঢ়া। দু’জনের বয়স ষাটের কাছাকাছি। একজন সুগারের রোগী এবং আরেকজন আর্থারাইটিস রোগী। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন হারিয়েছেন তাঁর স্বামীকে, আরেকজন ভাইকে। রমজানের প্রথম দিনেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরায় খুশির হাওয়া হটন রোড ও রেলপাড়ের ওই দুই পরিবারে।

১০ এপ্রিল অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের মৃ্ত্যু হয়। মৃত্যুর পর রিপোর্টে জানা যায়, তিনি কোভিড ১৯ আক্রান্ত ছিলেন। বাড়ির সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চুরুলিয়ার কোয়েরেন্টাইন সেন্টারে। সেখানেই পরীক্ষায় ওই প্রৌঢ়ার শরীরে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মেলে। তারপরেই তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দুর্গাপুরোর করোনা হাসপাতালে। শনিবার বিকেলে দুর্গাপুরের করোনা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান হটন রোডের বাসিন্দা প্রৌঢ়া। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরে যান তিনি। ফিরে এসে কেমন লাগছে? করোনা জয়ীর চোখে তখন জল। কিন্তু মুখে একগাল হাসি। প্রৌঢ়াকে তাঁর ছেলে বলেছিলেন, “কুছ নেহি হোগা আম্মা। ডরিয়ে মত। ডর কে আগে জিত হ্যায়।”

Advertisement

প্রৌঢ়া বলেন, “সত্যি বলছি ওখানে যাওয়ার পর সমস্ত ভয় আমার কেটে গেল। গরম গরম খাবার, গরম স্যুপ, ওষুধ নিয়মিত পাচ্ছিলাম। ডাক্তার, নার্সদের ব্যবহারও খুব ভাল। ২১ এপ্রিল ওরা জানাল খুশির খবর আছে আম্মা আপনার নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। আবারও একবার পরীক্ষা করেই ছেড়ে দেবো। ২৩ এপ্রিল পরীক্ষার পর আমায় ছেড়ে দিল।” ফিরোজা পরভিনের ছেলে মসিউদ জামাল বলেন, “অনেক ধন্যবাদ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে। ওরা অনেক সহযোগিতা করেছে। দেশবাসীকে জানাতে চাই আম্মা সুগারের রোগী হয়েও এই বয়সে করোনাকে জয় করলো। আপনারা ভয় পাবেন না। শুধু চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলুন।”

[আরও পড়ুন: লকডাউনে রেললাইন ধরে হেঁটে ঘরে ফেরার চেষ্টা, মালগাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের]

একইদিনে রেলপাড় নয়া মহল্লায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে এলেন আটান্ন বছর বয়সি এক প্রৌঢ়া। আর্থারাইটিসের রোগী তিনি। গত ৯ এপ্রিল করোনা আক্রান্ত হয়ে এক হাতুড়ে চিকিৎসক মারা যান। তাঁরই বোন ওই প্রৌঢ়া। তাঁর পরিবার প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তবে সুস্থ হয়ে ওঠা প্রৌঢ়া বলেন, “ওখানে খুব ভাল চিকিৎসা হয়েছে। এখানে কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় যে ভয় তৈরি হয়েছিল তা চলে যায় চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর। প্রথমে প্রতিবেশীদের আচরণে ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আর বাঁচবো না। কিন্তু সুস্থ হয়ে ফিরে এলাম।” প্রৌঢ়ার ভাইপো বলেন, “প্রথমে করোনা পজিটিভ ধরা পড়লেও পিসিকে বলিনি। পরে দু’বারের রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। পুলিশ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীকে অশেষ ধন্যবাদ।”  করোনা সন্দেহের রোগীকে নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তাতে রোগীর মনোবল ভেঙে যেতে পারে। তাই সেদিকে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের নজর দেওয়ার অনুরোধ জানাবো। 

পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি বলেন, “গত ১৪ এপ্রিল হটন রোডের প্রৌঢ়া এবং ১৫ এপ্রিল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুর্গাপুরের হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন। ১২ এবং ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্যদপ্তর জানতে পারে যে, তাঁরা করোনায় আক্রান্ত। এরপর ২১ এবং ২৩ এপ্রিল আবার দু’জনের লালারস পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হয়। দু’দিনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। দু’জনকে আপাতত ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।

[আরও পড়ুন: বাজার বন্ধ থাকার আতঙ্কে রাতেই খুলল দোকানপাট, সংঘর্ষ-লাঠিচার্জে উত্তপ্ত বেলুড়]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement