চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: সকাল থেকেই ভিড় বারাবনির ভানোড়া মোড়ে। বিশাল উঁচু বিদ্যুতের হাইটেনশন লাইনের খুঁটিতে কিনারে বসে বসে পা দোলাচ্ছেন মহিলা। শাড়ি পরিহিত ওই মহিলা এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নীচে দাঁড়িয়ে শয়ে শয়ে মানুষের তখন বুকের ধুকপুকানি বাড়ছে। এই বুঝি পা হড়কে পড়ে গেলেন। নয়তো ৩৩ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোলের বারাবনি (Asansol’s Barabani Incident) থানার পুলিশ। দমকল ও বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজনও এসে পৌঁছয়। কিন্তু কার্যত ঘটনার গতি প্রকৃতির উপর নজর রাখা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। তবে ঘন্টাপাঁচেক পর মহিলা নিজেই নেমে আসেন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে পুলিশ ও গ্রামবাসীরা।
বারাবনির ভস্কাজুড়ি গ্রামের রায়মণি টুডু। বছর তিরিশের ওই মহিলা স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া (Brawl with husband) করে রবিবার রাত থেকেই নিঁখোজ ছিলেন। মনোমালিন্যের জেরে বাড়িতে ৬ মাসের শিশুপুত্রকে রেখেই উধাও হয়েছিলেন তিনি। রায়মণির স্বামী ভরত হাঁসদা জানান, তাঁর স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে মাঝেই রাতবিরেতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফের ফিরে আসেন বাড়িতে। কিন্তু সোমবার ভিন্ন ঘটনার সাক্ষী থাকল ভস্কাজুড়ি গ্রাম। গৃহবধূর ওই কীর্তিতে পুলিশ প্রশাসন থেকে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবারের লোকজনদের নাকানিচোবানি খেতে হল এদিন।
সোমবার সকালে স্থানীয়রা দেখেন তাকে ৬০ থেকে ৭০ ফুট উপরে হাইটেশন বিদ্যুতের খুঁটিতে চড়ে বসে আছেন রায়মণি। একেবারে কিনারে বসে পা দোলাচ্ছিলেন তিনি। এতটাই উপরে ছিলেন ওই মহিলা, যে তাঁকে ভালভাবে দেখা যাচ্ছিল না। আবার নিচের আওয়াজও উপরে যাচ্ছিল না। ফলে পুলিশ ও দমকল বাহিনী অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে প্রস্তুত থাকলেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। ৫ ঘন্টা পর অবশ্য নিজের খেয়ালেই নিচে নেমে আসেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাতে লোহার ওই টাওয়ারে চড়ে বসেছিলেন মহিলা। কিন্তু বেলা বাড়তেই লোহার টাওয়ার গরম হয়ে ওঠে। তারপরেই থাকা যাচ্ছিল না বলে ধীরে ধীরে নীচে নেমে আসেন তিনি। ডিসি ওয়েস্ট অনমিত্র দাস বলেন, “এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা ডিভিসির হাইটেনশন টাওয়ারে উঠে পড়েছিলেন। তাঁকে বুঝিয়ে নিচে নামানো হয়। তারপর তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই মহিলা বর্তমানে সুস্থ আছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.