চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: লকডাউনে বন্ধ স্কুলের পঠন-পাঠন। বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলিতে অনলাইনে পড়াশোনা চালু থাকলেও সরকারি প্রাইমারি ও হাইস্কুলের পড়ুয়ারা বঞ্চিত রয়েছে পড়াশোনা থেকে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এলেন একদল যুবক-যুবতী। যাঁদের অধিকাংশই আবার কলেজ পড়ুয়া। ‘অঙ্গীকার ফাউন্ডেশন’ নামে এক সংগঠন তৈরি করে ওই কলেজ পড়ুয়ারা বেশকিছু সামাজিক কাজে ইতিমধ্যেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এই লকডাউনের মাঝে। মাস্ক বিলি, দৈনিক খাবারের ব্যবস্থা করা, আমফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনে ত্রাণ পাঠানোর পর এবার দুঃস্থ, আর্ত পড়ুয়াদের পড়াশোনা করানোর দায়িত্ব নিলেন তাঁরা।
হীরাপুরের পিছিয়ে পড়া এলাকা ‘বনগ্রামে’ গেলেই দেখা যাবে এই মনোগ্রাহী দৃশ্য। গ্রামের মনসা মন্দিরই এখন বদলে গিয়েছে স্কুলে। চতুর্থ শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীর পড়ুয়াদের প্রতিদিন পড়াচ্ছেন তাঁরা। বর্ষাকালে খোলা আকাশের নিচে সবসময় পড়ানো সম্ভব নয়। তাই গ্রামের মনসা মন্দিরকে তাঁরা বেছে নিয়েছেন পঠন-পাঠনের বিকল্প ভবন হিসাবে।
মন্দিরে লাগানো হয়েছে বৈদ্যুতিক পাখা। আনা হয়েছে ব্ল্যাকবোর্ড। শুধু পাঠ্য বইয়ের পড়াশোনা নয়, নাচ, গান, আঁকা এবং যোগা ক্লাসও হচ্ছে এখানে। অঙ্গীকারের পক্ষে সুনেত্রা, মৌটুসি, শুভম, প্রিয়া, শৌভিক, শ্রেয়ারা বলেন, “এই মূহূর্তে গ্রামের ২০ জন পড়ুয়া আমাদের কাছে নিয়মিত আসছেন। জুলাইয়ের প্রথম দিন থেকে বিনামূল্যে পাঠশালা শুরু করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে ক্যারাটে ক্লাসও শুরু হবে। এরপর মিড-ডে মিলের মতো সুষম আহারও তাঁদের দেওয়া হবে যতদিন না করোনার আবহমুক্ত পরিবেশ তৈরি হবে। স্কুল কলেজ না খোলা কিংবা জনজীবন স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্কুলছুট পড়ুয়াদের দায়িত্ব নিয়েই চলবে পঠন-পাঠন।” অঙ্গীকারের এই কাজ দেখে খুশি গ্রামবাসীরাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.