ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধে দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের অধিকাংশ অভিযোগকেই মান্যতা। বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতাকে কম্বলকাণ্ডের দায় স্বীকার করাতে বাধ্য করল বিজেপির (BJP) শীর্ষ নেতৃত্ব। বস্তুত পদ্ম শিবিরের দিল্লির নেতৃত্বের চাপে পড়ে কম্বলকাণ্ড নিয়ে গলার সুর নরম করেই এদিন হলদিয়ায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘ঘটনায় কোনও চক্রান্ত ছিল না। ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি ছিল। সিভিক ভলান্টিয়ার, পুলিশ বা স্বেচ্ছাসেবকরা থাকলে হয়তো এমন দুঃখজনক ঘটনা হত না। ছোট জায়গায় অনেক লোক হয়ে গিয়েছিল।’’
তবে কম্বলকাণ্ড নিয়ে সকালেই বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) সরাসরি শুভেন্দুর সভার ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আক্রমণ করেন। বলেন, ‘‘শুধু পুলিশের উপর দায় চাপালে চলবে না। ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব স্বেচ্ছাসেবকদেরও থাকে।’’ বিরোধী দলনেতাকে এমন কটাক্ষ করলেও দিলীপ ঘোষকে পালটা আক্রমণের পথে হাঁটেননি তিনি। উলটে তাঁর প্রশংসা করে বলেন, ‘‘দলের সিনিয়রের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার কোনও প্রশ্ন ওঠে না।’’ ‘মর্নিং ওয়াক’ বিতর্কের পর তাঁর এই মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। দিলীপ নিয়ে শুভেন্দুর এমন প্রশংসাসূচক বাক্য শুনে রাজ্য বিজেপির এক সিনিয়র নেতার মন্তব্য, ‘‘গুঁতোয় পড়লে ছুঁচোও যে গাছে ওঠে তা স্পষ্ট বিরোধী দলনেতার মন্তব্যে।’’
পদপিষ্টর ঘটনার পর বিজেপি নেতারা পালিয়ে গেলেও স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও কর্মীরাই উদ্ধার করে জখমদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC)সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে এদিন মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বিরোধী দলনেতার ঘোষিত ২১ ডিসেম্বর নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে লালন শেখের মৃত্যুতেও শুভেন্দুকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়ে ফের তদন্তের দাবি করেন তৃণমূল মুখপাত্র।
বুধবার আসানসোলে (Asansol) পদপিষ্ট হয়ে নিহত ৩ জনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। নিহতদের পরিবার পিছু দু’ লক্ষ টাকা ও গুরুতর আহত ছ’জনকেই পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক দিয়েছে রাজ্য সরকার। আসানসোল মহকুমাশাসকের দপ্তরে চেক তুলে দেওয়ার সময় ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা ও ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্ত্রী চন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘চিকিৎসাধীন যাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। আজই দু’জনের কার্ড হয়ে গেছে, বাকি চারজনের কালকের মধ্যে হয়ে যাবে।’’
কম্বলকাণ্ড নিয়ে এদিন আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের তরফে ডিসি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। নিহতদের ময়নাতদন্তের সময় তাঁদের পরিবারের সদস্যদের পাশে কালো ব্যাজ পরে হাজির ছিলেন মেয়র বিধান উপাধ্যায় ছাড়াও দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী-সহ তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা। রাস্তার উল্টোদিকে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়-সহ বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। মাঝখানে কমব্যাট ফোর্স। কম্বলকাণ্ডের প্রতিবাদে আসানসোলে মর্গের সামনে এসে এদিন বিজেপি বিরোধী স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মীরা। তখন অবশ্য গেরুয়া শিবির চুপ ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.