সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুলিশের অনুমতি ছাড়াই আসানসোলে আয়োজিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার দায় কার, তা নিয়ে চলছে জোর তরজা। স্বাভাবিকভাবেই গোটা ঘটনায় রাজ্যের শাসকদল দুষছে শুভেন্দুকেই। বিজেপির অন্দরেও ভিন্ন মত। দিলীপ ঘোষ এই ঘটনার জন্য শুভেন্দুকেই খানিকটা দায়ী করেছেন। পুলিশের পাশাপাশি খোদ শুভেন্দুরও নিরাপত্তার বিষয়ে ভাবা উচিত ছিল বলেই মনে করছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি।
বৃহস্পতিবার সকালে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “পুলিশের উপর ভরসা করে এই ধরনের অনুষ্ঠান করা ঠিক না। আরও প্রস্তুতি প্রযোজন ছিল। এ রাজ্যের মানুষ কিছু পাবে শুনলে দৌড়ায়। লক্ষীর ভাণ্ডারেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দান খয়রাতি মানবতার অপমান। কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে মানুষকে টেনে আনা আমি সমর্থন করি না। গরিবকে সাহায্য করার অন্য নানারকম উপায় আছে।” যদিও তার আগে বুধবার রাতেই শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, “আমি এই ঘটনার জন্য কাউকে দোষারোপ করছি না। তবে আমি চলে আসতেই পুলিশ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত তুলে নেওয়ায় ওই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে।” শুভেন্দু এবং দিলীপের ভিন্ন মত নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কানাঘুষো শুরু হয়েছে। দিলীপের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি বঙ্গ বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বই আরও একবার প্রকট হল?
My statement on the Asansol Tragedy: pic.twitter.com/edROyGqpli
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) December 14, 2022
উল্লেখ্য, আসানসোল কর্পোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে খুবই স্বল্প পরিসরে এদিন ‘শিবচর্চা’ নামে কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী কাউন্সিলর চৈতালী তিওয়ারি। শুভেন্দু ভাষণ শেষে প্রতীকী কম্বল বিতরণ করে চলে যাওয়ার পরই চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। সভায় কম্বল দেওয়ার কথা ছিল ৫ হাজার। খোলা হয় ৫টি কাউন্টার। কিন্তু সেখানে ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও শীতবস্ত্র নিতে আসা হাজার হাজার মানুষের শৃঙ্খলা রাখতে কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। চরম বিশৃঙ্খলা, হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে দুই মহিলা ও এক কিশোরী-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। মৃত ঝালি বাউড়ি (৫১) কাল্লা, চাঁদমণি দেবী (৫০) ও প্রীতি সিং (১৩) আসানসোলের রামকৃষ্ণ ডাঙালের বাসিন্দা। আশঙ্কাজনক হয়ে হাসপাতালে ভরতি আরও সাতজন।
ঘটনার জন্য বিজেপিকে পুরোপুরি দায়ী করে পুলিশ কমিশনার জানান, ‘‘বিজেপির এই অনুষ্ঠানের পুলিশি অনুমতি নেওয়া হয়নি। বিরোধী দলনেতা ওখানে আসছেন জেনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কমিশনারেট থেকে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কত মানুষ আসছেন, কী হবে তার কোনও খবর উদ্যোক্তারা পুলিশকে দেননি।’’ আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের তরফে আরও জানানো হয়, ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি না থাকলেও বিরোধী দলনেতা আসছেন জেনে প্রোটোকল মেনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কাজেই তিনি চলে যেতেই সেই ব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.