চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: বিজেপির পুরসভা অভিযান রণক্ষেত্র চেহারা নেওয়ার পর আসানসোলের মেয়রের সঙ্গে বাকযুদ্ধ লেগেছে বিজেপি রাজ্যে নেতাদের। কদর্য ভাষায় আক্রমণ শুরু হয়েছে একে অপরের বিরুদ্ধে। মেয়র শনিবার বাবুলকে বিজেপির বাঁদর বলে কটাক্ষ করেছেন। অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু মেয়রের মাথায় ঘোল ঢালবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সায়ন্তন বসুর জবাবে মেয়র বলেছেন, “গাধার পিঠে যদি চাপতেই হয় তাহলে ওর পিঠেই চাপব। বিজেপিতে ওই সব থেকে বড় গাধা”।
শনিবার আসানসোলের কল্যাণপুরে এসে সায়ন্তন বসু মেয়রের উদ্যশ্যে বলছেন “মাথায় ঘোল ঢেলে দেব। মাথা কামিয়ে গাধার পিঠে চাপিয়ে আসানসোল থেকে বের করে দেব”। শুক্রবার বিজেপির যুব মোর্চায় তৃণমূলের হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জের প্রসঙ্গ টেনে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন “আসানসোলে নতুন গুন্ডা জন্মেছে তাকে সিধা করতে বেশি সময় লাগবে না”। সায়ন্তন বসুর অভিযোগ, বিজেপির মিছিলে যে হামলা হয়েছে তা আসানসোলের মেয়রের মদতেই হয়েছে। তাঁরই পরিকল্পিত। সায়ন্তন বসুর জবাবে মেয়র বলেছেন “গাধার পিঠে যদি চাপতেই হয় তাহলেও ওর পিঠেই চাপব। বিজেপিতে ওই সব থেকে বড় গাধা”। শনিবার বাবুল সুপ্রিয়র নামে আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন মেয়র। তাঁর অভিযোগ রক্তদান শিবিরকে বানচাল করতে ও আসানসোলে হিংসা ছড়াতে বাবুলের উদ্যোগে বিজেপি অশান্তি পাকিয়েছে। এদিন তিনি কেন্দ্রীয় বন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে বিজেপির বাঁদর বলে কটাক্ষ করেছেন। বলেছেন এধরনের মানুষের জন্য খাঁচা প্রস্তুত আছে।
[আরও পড়ুন: আসানসোলে দুষ্কৃতী তাণ্ডব নিয়ে সরব বাবুল, ‘বিজেপির বাঁদর’ বলে কটাক্ষ জিতেন্দ্রর]
বিজেপির যুবমোর্চার পুরসভা ঘেরাও অভিযান ঘিরে যে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল তার প্রেক্ষিতে ১৩ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হল শনিবার। বিজেপির জেলা সম্পাদক সন্তোষ সিং এদিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করে বলেন, তৃণমূলের গুন্ডারা বোমা ছুঁড়ল, গুলি ছুঁড়ল অথচ পুলিশ লাঠিপেটা করল বিজেপি কর্মীদের ওপর। এমনকি গ্রেপ্তারও করা হল শুধুমাত্র বিজেপি কর্মীদের। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি।
ঘটনার নিন্দা করে আসানসোলের সাংসদ তথা মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তিনি ফেসবুক ও টুইটারে মুখ ঢাকা সশস্ত্র দুস্কৃতীর ছবি পোস্ট করে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ডানহাতে বন্দুক বামহাতে লাঠি। মুখ ঢাকা সাদা গামছা দিয়ে। পরনে নীল জিনসের প্যান্ট ও ছাই রঙা জামা। পুলিশের সামনেই ঘোরাফেরা করছে অবাধে। সুভাষ ইনস্টিউটের দরজার সামনে ওই দুষ্কৃতীকে দেখা যায়। বাকীদের দেখা যায় লাঠি হাতে। বিজেপি যুব মোর্চার সদস্যরা যখন ব্যারিকেড ভেঙে ধেয়ে আসছে পুরনিগমের দিকে তখন দেখা যায় শূন্যে গুলি ছুঁড়ে ওই দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ল পুলিশ বাহিনীর পিছনে। বাবুলের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা অস্ত্র হাতে ঘোরাফেরা করল, বোমাবাজি করল অথচ আসানসোলের সাধারণ মানুষকে লাঠিপেটা করল পুলিশ। তীব্র নিন্দা করে তিনি লেখেন এই অত্যাচারী সরকারের পতন এবার অনিবার্য।
যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অভিষেক গুপ্তা জানিয়েছেন, এরকম কোনও দুষ্কৃতী ছিল না বা কোনও গুলিগোলা চলেনি। মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতী আমদানি করেছিল অশান্তি পাকাবার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.