শেখর চন্দ্র, আসানসোল: করোনা রুখতে টিকাকরণে (COVID-19 Vaccine) জোর দেওয়া হয়েছে। অথচ সেই টিকাকরণ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে এবার প্রশিক্ষণ ছাড়াই ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘটনা সামনে এল আসানসোলে । কুলটির যৌনপল্লিতে ঘটেছে এমন ঘটনা। অভিযোগ, সেই টিকা দিয়েছেন আসানসোলের (Asasole) ডেপুটি মেয়র। যদিও তাঁর দাবি, তিনি স্রেফ সচেতনতার প্রচার করছিলেন। এদিকে ঘটনার খবর সামনে আসতেই দ্রুত পদক্ষেপ করল স্বাস্থ্যদপ্তর। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। চিকিৎসক ও দুই নার্সকে শো-কজ করেছে আসানসোল পুরনিগমের কমিশনার নীতিন সিংহানিয়া। অন্যদিকে, তাবাসুম আরাকে শোকজ করেছেন পুরো প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়।
শনিবার যৌনপল্লিতে পুরসভার পক্ষ থেকে টিকাকরণ শিবির চলছিল। কুলটির চবকা যৌনপল্লির সেই শিবিরে হঠাৎ করেই হাজির হন বিদায়ী ডেপুটি মেয়র তথা বর্তমান পুরবোর্ডের সদস্য তাবাসুম আরা। দেখা যায়, নার্সের হাত থেকে সিরিঞ্জ নিয়ে তিনি একজনকে কোভিড ভ্যাকসিন দেন। এর কিছুক্ষণ পর শিবির থেকে চলে যান তিনি। পরে টিকাদানের সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হতেই বিষয়টি সকলের নজরে আসে। বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, প্রশিক্ষণ ছাড়া পুরবোর্ডের সদস্য আদৌ কি এই কাজ করতে পারেন? ইতিমধ্যে টিকাকরণের এই ভিডিও টুইট করে তীব্র সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।
Seems like TMC govt has no control over its administrators.TMC’s Tabassum Ara, a member of the administrative body of AMC, has vaccinated people herself and risked hundreds of lives…Will her political colour shield her from stern punishment?@MamataOfficial pic.twitter.com/EaF3EsK9Bw
— Babul Supriyo (@SuPriyoBabul) July 3, 2021
এর সাফাই দিতে গিয়ে তাবাসুম আরা জানান, “স্কুলজীবনে আমার নার্সিং প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিল। তবে আমি সিরিঞ্জ হাতে ধরেছিলাম। টিকা দিইনি।” পুর প্রশাসকের অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “আমি তো দেখিনি। এ নিয়ে আর কিছু বলব না।” পুরসভার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক দীপক গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঘটনার নিন্দা করেছেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দাররও। যদি বিদায়ী ডেপুটি মেয়র তাবাসুম আরার আরও দাবি, “বাড়িতে আমি ইনসুলিন দিয়ে থাকি। তাই অভিজ্ঞতা রয়েছে।”
এদিকে এই ঘটনা কীভাবে ঘটল তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছেন, “প্র্যাকটিস না থাকা এবং প্রশিক্ষণ না থাকাও সত্ত্বেও কীভাবে টিকা দিলেন উনি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের পাশাপাশি প্রশাসনিক তদন্তও হবে।” এদিকে ডাক্তার অপূর্ব কুমার পান, নার্স মোনালি ভট্টাচার্য ও শাহেনওয়াজ পরভিন এই তিনজনকে শোকজ করা হয়েছে। পাশাপাশি, যে মহিলা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাঁর দেখাশোনার জন্য পুরনিগমের তরফে এক চিকিৎসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.