চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: দাউ দাউ করে জ্বলছে আসানসোলের জামুরিয়ার বন্ধ খনি। ১২টি খনি মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে গনগনে আগুন। রাতভর ডোজিং করে খনির আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে ভয়াবহ রূপ নিল জামুরিয়ার বন্ধ খনি তারা। বুধবার বন্ধ খনির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগুনের হলকা সহযোগে খুলে গেল ১২টি মুখ। খনিগর্ভে যে ক্রমাগত আগুন বেড়েই চলেছে তা খোলামুখের জ্বলন্ত রূপ দেখলেই টের পাওয়া যায়। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দমকল কর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। কতক্ষণে আগুন নিভবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই প্রসঙ্গে দমকলের ওসি অজয় চৌধুরি বলেন, ‘আগুন জ্বললেও এই মুহূর্তে তেমনকিছুই করার নেই। জলের সঙ্গে খনিগর্ভে যদি তরল নাইট্রোজেন প্রবেশের ব্যবস্থা করানো যায় তাহলে হয়তো জ্বলতে থাকা আগুন নিভতে পারে।’ এলাকার অনুপম চক্রবর্তী জানান, খনিগর্ভে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়া অনেকটাই দীর্ঘ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে রাজ্য বিদ্যুৎনিগমের কর্তাব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে আছেন। আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে মাটি, জল ও বালির সংমিশ্রণে আগুন নেভানো হবে। আগুনের জেরে ধোঁয়ায় ঢেকেছে গোটা এলাকা। আবহাওয়াও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছেন। তবে এখনই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। পরিস্থিতি বুঝে এলাকার বাসিন্দাদের জন্য অস্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকেই খনিগর্ভের আগুন ভয়াবহ রূপ নিতে শুরু করে। খনিগর্ভের ভিতরে জল জমে রয়েছে। এখন আগুন নেভানোর কাজ দ্রুততার সঙ্গে শুরু করতে গেলে সেই জল পেরিয়ে যেতে হবে। তারজন্য নৌকার ব্যবস্থা করা আশু প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে খনির ম্যানেজার আদিত্য নাথন বলেন, খনিটি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। কয়লা যেহেতু হাইড্রোকার্বন জাতীয় বস্তু তাই তাপমাত্রা বাড়ায় হয়তো নিজেই জ্বলে উঠেছে। ম্যানেজার স্বীকার না করলেও অভিযোগ, খনিতে আগুন ধরার পিছনে দায়ী কয়লা চোরেরা। তাদের তৈরি সুরঙ্গ পথ দিয়েই অক্সিজেন ঢুকেছে খনিতে। মিথেন গ্যাসের সংস্পর্শে আগুন ধরে গিয়েছে। তবে কতক্ষণে জল বালির সংমিশ্রণে ডোজিং করে পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে আসবে জানে না কেউ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.