চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: জন্মদিনই আনন্দ বদলে গেল মৃত্যুদিনের বিষাদে। তেত্রিশ বছরের জীবনে ইতি টেনে দিল অজয় নদের স্রোত। তলিয়ে মৃত্যু হল আসানসোলের যুবক মন্থন কুমার মঙ্গলমের। বন্ধুদের সঙ্গে জন্মদিনের আনন্দ উদযাপন করতে গিয়েই এমন দুর্ঘটনা বলে জানা গিয়েছে। শোকের ছায়া নেমে আসে চিত্তরঞ্জন এলাকায়।
১৯৮৭ সালের ৮ ডিসেম্বর বিহারের মুঙ্গেরে জন্ম হয়েছিল মন্থন কুমার মঙ্গলমের। এবছর তাঁর জন্মদিন পড়েছিল রবিবার। ফলে জন্মদিনের আনন্দ ছিল দ্বিগুণ। বন্ধুদের সঙ্গে জন্মদিন সেলিব্রেশন করতে তিনি চলে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ড সীমানার অজয় নদের তীরে। সেখানে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান। বন্ধুরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও, শেষরক্ষা হয়নি। ততক্ষণে কুমার মঙ্গলমের প্রাণবায়ু নিভে গিয়েছে। বাড়িতে তখন ছেলের প্রিয় চিকেন কারি রান্নার তোড়জোড়। কিন্তু সন্ধেবেলা ছেলের মৃত্যু সংবাদ বাড়িতে পৌঁছনোমাত্রই সমস্ত আনন্দে নিমেষে বিষাদে পরিণত হয়।
আদতে বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা মন্থন কুমার মঙ্গলম। বছর তিনেক আগে চাকরিতে যোগ দেন। বাবা নেই, চিত্তরঞ্জনের ৩৫ নম্বর রোডের আবাসনেই মা, বোন ও দাদার সঙ্গে নিয়ে থাকতেন তিনি। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন মন্থন। রবিবার ঘটনার আকস্মিকতায় স্তম্ভিত হয়ে যান সবাই। নিজের চোখ-কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কেউই। খবর পেয়েই ছুটে যান কারখানার কর্মীরা। কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মান্তার সিং বলেন, ”খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনায় আমরা শোকাহত।” আরেক কর্মী সত্যনারয়ণ মণ্ডলের কথায়, ”ছেলেটি মেধাবী ছাত্র বলে সুখ্যাতি ছিল। টিউশনিও পড়াতো। কী করে যে কী হয়ে গেল তা ভাবাই যাচ্ছে না।”
কারখানার কর্মীদের অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন সীমানায় অজয়ের তীর থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে নেওয়ায় বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। সেজন্যই হয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন কুমার মঙ্গলম। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এডিসিপি ওয়েস্ট অনমিত্র দাস বলেন, ”নদীতে ডুবে যাওয়ার ঘটনার খবর পেয়েছি। যারা সঙ্গে গিয়েছিল, চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.