রাজ্য সম্মেলনে যোগ দিতে সিপিএমের প্রতিনিধিরা। ছবি: সায়ন্তন ঘোষ।
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: এলাহি আয়োজনের ইঙ্গিত ছিল আগেই। ডানকুনিতে সিপিএমের ২৭ তম রাজ্য সম্মেলনের শুরুতে তা প্রত্যক্ষভাবে টের পাওয়া গেল। পার্টিতে রক্তক্ষরণ অব্যাহত থাকলেও একেবারে ‘ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল’ পরিবেশে সংগঠন নিয়ে কাটাছেঁড়া করতে বসল সর্বহারাদের দল। ৯টি কুলারে ঘেরা ডানকুনির সম্মেলন কক্ষে বসেই নাকি শ্রমিক-কৃষকের স্বার্থে দিক নির্দেশিকা ঠিক হবে! তিনদিনের রাজ্য সম্মেলন থেকে বঙ্গ সিপিএমের ভবিষ্যৎ পথ কোনদিকে মোড় নেবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে এটুকু স্পষ্ট, সম্মেলনের প্রথমদিন মাঠে-ময়দানে রাজনৈতিক লড়াইকে পাশে রেখে দলের নেতানেত্রীরা মন দিলেন ভোজনে। কোটি টাকা বাজেটে চর্ব্য-চোষ্য-লেহ্য-পেয়র আয়োজনে খামতি নেই এতটুকুও।
শনিবার দুপুরে ডানকুনির কোল কমপ্লেক্সের শান্তিমঞ্চে দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের সূচনা করে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। একে একে যোগ দেন পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ কারাট, বৃন্দা কারাট, মহম্মদ সেলিম, মানিক সরকার, এম এ বেবি, অশোক ধাওয়ালে, সূর্যকান্ত মিশ্র, হান্নান মোল্লারা।
এবারের সম্মেলনে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী বিষয় দেখা গেল। ধর্মকে অস্বীকার করল না সিপিএম। শ্রীরামকৃষ্ণ, তারকেশ্বর মন্দির, গির্জার ছবি দিয়ে প্রদর্শনী দেখা গেল শান্তিমঞ্চের বাইরে। ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার আবার কমরেড সুলভ আচরণ মেনে মুষ্টিবদ্ধ হাত নয়, ভারতীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী করজোড়ে শহিদ বেদিতে নমস্কার করলেন তিনি। বিখ্যাত গণসঙ্গীত শিল্পী সলিল চৌধুরীর উপর প্রদর্শনী হচ্ছে রাজ্য সম্মেলনে।
পরবর্তী অংশ মধ্যাহ্নভোজ। মোট ৮০০ জনের রান্না হয়েছে শনিবার। মাছেভাতে বাঙালির মেনুতে ভাত, পটল চিংড়ি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কাতলা কালিয়া, চাটনি। সন্ধ্যার স্ন্যাক্সে চিকেন, ভেজ পকোরা। চা-কফি মিলবে ২৪ ঘন্টা। নৈশভোজে থাকছে পোলাও, রুমালি রুটি, চিকেন কারি। এতেই রসনাতৃপ্তিতে ইতি পড়ছে না। পাতে থাকবে রিষড়ার ফেলু মোদকের মিষ্টি, চণ্ডীতলার ভাপা নলেনগুড়ের সন্দেশ। এবারের রাজ্য সম্মেলনের আলোচনার মূল বিষয়, দলের কর্মীসংখ্যা হ্রাস। নিন্দুকদের কটাক্ষ, কর্মী সংকট থাকলেও কমরেডদের পাতে পদের কমতি নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.